অনলাইন ডেস্ক:
শ্রীলঙ্কায় অবরুদ্ধ প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজাপাকসেকে তার সরকারী বাসভবন থেকে সরিয়ে নিয়ে গেছে দেশটির সেনাবাহিনী। পদত্যাগী এই প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে কয়েক হাজার বিক্ষুদ্ধ জনতা হামলা চালানোর পর মঙ্গলবার সকালে সেখান থেকে তাকে সরিয়ে নেয়া হয়।
একজন শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘ভোর রাতে হামলার ওই ঘটনার পর সেনাবাহিনী সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং তার পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া গেছে।’
বাসবভবে কমপক্ষে ১০টি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছিল বলেও জানান তিনি।
গতকাল সোমবার পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন মাহিন্দ রাজাপাকসে। এরপর পরিস্থিতি শান্ত না হয়ে আরো অশান্ত হয়েছে। সহিংসতায় কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
ক্ষুদ্ধ জনতা মহিন্দা রাজাপাকসের সরকারী বাড়ির প্রধান ফটক ভাঙতে চাইলে ভেতর থেকে গুলি ছোঁড়া হয়। এতে তারা আরো ক্ষুব্ধ হয়ে পার্ক করে রাখা একটি ট্রাকে আগুন দেয়। তবে তারা রাজাপাকসাদের পৈত্রিক বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা কেবল মহিন্দা রাজাপাকসের সরকারি বাড়িতে হামলা চালিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, তারা দ্বীপরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট গোতবায়া রাজাপাকসে এবং সদ্য প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেয়া মাহিন্দা রাজাপাসের পৈতৃক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাড়িটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
বিক্ষোভকারীরা সোমবার শাসকদলের আরো এক এমপি এবং এক সাবেক মন্ত্রীর বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া শাসকদলের এমপি সনৎ নিশান্তের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। শ্রীলঙ্কার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মারফত প্রকাশ্যে আসা ভিডিওতে মাউন্ট লাফিনিয়ায় দেশের প্রাক্তন মন্ত্রী জনসন ফার্নান্ডোর বাড়ি জ্বলতে দেখা গেছে।
গণরোষে নিহত শ্রীলঙ্কার শাসক দলের এমপি
সোমবার বিকেলে মাহিন্দা রাজাপাকসের ইস্তফার পর তার সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন অমরকীর্তি আতুকোহালা। বিক্ষোভকারীদের হটাতে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘণ্টাখানেক পরেই তার লাশ পাওয়া যায় বিক্ষোভস্থল থেকে।
উল্লেখ্য, নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে গত মাসে দেশটি বিক্ষোভ শুরু হয়। বিশেষ করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ সঙ্কট, জ্বালানির দুষ্প্রাপ্যতায় নাজেহাল জনতা মাঠে নেমে আসে। সরকার জরুরি অবস্থা জারি, কারফিউ জারি করেও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেনি।