অনলাইন ডেস্ক:
শ্রীলঙ্কায় চলছে লঙ্কাকাণ্ড। গণআন্দোলনের মুখে কয়েকদিন আগেই পদত্যাগ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসে। রনিল বিক্রমাসিংহে নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেও রাষ্ট্রপতি গোটাবায়ারের পদত্যাগের দাবি উঠেছে সর্বমহল থেকে। কারফিউ ভেঙে রাজপথে নেমেছে জনতা।
দেশটির অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ায় সহসা শান্ত হওয়ার নয় কলম্বো। রাজনৈতিক এই অস্থিরতার ভেতরে এশিয়া কাপ ক্রিকেট আয়োজন ক্রমেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের (এসএলসি) জন্য। যদিও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) এশিয়া কাপ শ্রীলঙ্কা থেকে অন্য দেশে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেয়নি এখন পর্যন্ত।
২৭ জুলাই পর্যন্ত দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে এসিসি। বেঁধে দেওয়া সময়ে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে এসএলসিকে। শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা অপারগতা প্রকাশ করলে ২০২২ সালের এশিয়া কাপ টি২০ টুর্নামেন্ট স্থানান্তর করা হতে পারে বাংলাদেশ বা আরব আমিরাতে। এসিসি ও এসএলসির কাছে এরই মধ্যে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বিসিবি।
১৯ মার্চ এসিসির বার্ষিক সভায় এশিয়া কাপের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়। বার্ষিক সভায় এসএলসি টুর্নামেন্ট ধরে রাখার পক্ষে যুক্তি দেখায়। সভায় বিকল্প ভেন্যু নিয়েও কথা হয়। সেখানেই টুর্নামেন্টটি বাংলাদেশকে আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দেন বিসিবির প্রতিনিধি।
বিসিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এশিয়া কাপের আয়োজক এখনও শ্রীলঙ্কা। আমাদের প্রস্তাব ছিল, এসএলসি টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে না পারলে বাংলাদেশ স্বাগতিক হতে প্রস্তুত।’ যদিও ভারত, পাকিস্তানের পছন্দ আরব আমিরাত।
সুযোগ-সুবিধার দিক থেকে বিবেচনা করলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিকে এগিয়ে রাখতে হচ্ছে। তবে কম খরচে টুর্নামেন্টের সফল আয়োজন করতে হলে বাংলাদেশ ভালো ভেন্যু। ভারত পাশে থাকলে টুর্নামেন্টটি ঢাকায় হতে পারে। এসিসির বর্তমান সভাপতিও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সদস্য সচিব জয় শাহ। কোনো সন্দেহ নেই এশিয়া কাপের ভেন্যু স্থানান্তরে সিদ্ধান্ত হলে এসিসি সভাপতির পছন্দ অগ্রাধিকার পাবে।
বাংলাদেশ এশিয়া কাপ আয়োজনে দারুণ সফল। ২০১২ থেকে ২০১৬ সালে টানা তিনটি এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হয় ঢাকায়। ২০১৮ সালে ওয়ানডে এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হয় আরব আমিরাতে। যে টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ ও ভারত। ২০২২ সালের টুর্নামেন্টটি ঢাকায় হলে চমক দেখাতে পারে স্বাগতিকরা। ভেন্যু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলেও টুর্নামেন্টের দিনক্ষণ ঠিক হয়ে আছে।
২৭ আগস্ট থেকে ১১ সেপ্টেম্বর হবে এবারের এশিয়া কাপ। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তানের সঙ্গে ষষ্ঠ দল যোগ দেবে বাছাই টুর্নামেন্ট থেকে। প্রথম রাউন্ড হবে দুই গ্রুপে। সুপার ফোর খেলবে পয়েন্ট টেবিলের সেরা চার দল। সেরা দুই দল উন্নীত হবে ফাইনালে। মোট ১৩টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে টুর্নামেন্টটিতে।
২০১৪ সাল পর্যন্ত এশিয়া কাপ ছিল ওয়ানডে টুর্নামেন্ট। ২০১৬ সাল থেকে টি২০ টুর্নামেন্ট অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওয়ানডে এবং টি২০ বিশ্বকাপের সঙ্গে সমন্বয় রেখে এশিয়া কাপও হচ্ছে অনুরূপ সংস্করণে। ২০২১ সালে টি২০ বিশ্বকাপ হলেও এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হয়নি করোনার কারণে। এ বছর টি২০ বিশ্বকাপ থাকায় এশিয়া কাপও হবে টি২০ সংস্করণে। এশিয়ার ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোর জন্য আয়ের ভালো একটি উৎস এশিয়া কাপ।