সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪ ১০:২১ পূর্বাহ্ণ
সর্বশেষ সংবাদঃ

কাগজ বিক্রেতা থেকে প্রধানমন্ত্রী!

অনলাইন ডেস্ক:

প্রত্যেক মানুষের জীবনে নানা প্রতিকূলতা রয়েছে। সেই প্রতিকূলতা কাটিয়ে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছনোতেই জীবনের সাফল্য লুকিয়ে থাকে।

যেমন সানা মারিন। ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে তিনি সে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী।

খুব ছোট বয়েসে সানার মদ্যপ বাবার সঙ্গে মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে হয়ে যায়। সেই বিচ্ছেদের পর নিদারুণ আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে পড়েন তাঁরা। এর পর তাঁর মা এক মহিলার সঙ্গে একত্রবাস করতে শুরু করেন। ফলে এক মহিলা পরিবেষ্টিত পরিবারে মধ্যে বড় হয়ে ওঠেন সানা।

নিদারুণ আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে তাঁকে খুব ছোট বয়স থেকে টাকা রোজগারের জন্য বেরিয়ে পড়তে হয়। এক বেকারিতে কাজ নেন তিনি। এ ছাড়া আংশিক সময়ের জন্য সংবাদপত্রও বিক্রি করতেন।

পড়াশুনায় খুব আহামরি ছিলেন না। দক্ষিণ ফিনল্যান্ডের উপকণ্ঠে একটি ছোট্ট শহরের স্কুলে পড়তেন। সেই স্কুলের এক শিক্ষিকা পাসি কেরভিনেন জানিয়েছেন, সানা ‘গড়পড়তা’ ছাত্রীদের মতো ছিলেন। উন্নতির জন্য তাঁকে মাঝে মাঝে বাড়ির কাজ দেওয়া হতো।

২০০৪ সালে ১৯ বছর বয়সে তিনি স্নাতক হন। অতঃপর, ট্যাম্পারে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান সানা। সেখানে তিনি প্রশাসনিক বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বছরে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় পেশাদার ফুটবলার মার্কাস রাইকোনেনের। তার পর প্রেম। ১৬ বছর ধরে প্রেম করার পর ২০২০ সালে বিয়ে করেন তাঁকে।

সেখানে পড়াশুনার সময়ই তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হন। মনে হয়, পরিশ্রম করলে শুধু তাঁর নিজের জীবন নয়, অন্যের জীবনেও পরিবর্তন আনা সম্ভব। বিশেষ করে মহিলাদের জীবনে।

তিনি সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট দলে যোগ দেন এবং ২০০৬ সালে সদস্যপদ লাভ করেন।

২০১০ সালে তিনি দলের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হন। ২০১২ পর্যন্ত তিনি ওই পদে থাকেন।

তবে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল পরাজয় দিয়ে। ২২ বছর বয়সে তিনি ট্যাম্পারে সিটি কাউন্সিলের নির্বাচনে লড়েন। কিন্তু সেই নির্বাচনে তিনি হেরে যান।

কিন্তু ২০১২ সালে পরবর্তী নির্বাচনে তিনি জয়ী হন এবং কাউন্সিল চেয়ারম্যান পদে উন্নীত হন। ওই পদে তিনি ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ছিলেন।

২০১৫ সালে তিনি ফিনল্যান্ডের পার্লামেন্টের সাংসদ হন। ২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার জিতে তিনি পরিবহণ ও যোগাযোগ মন্ত্রী হন।

এর পর মাত্র ৩৫ বছর বয়সে তিনি পাঁচ জোটের নেতা হিসাবে ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হন।

ইনস্টাগ্রাম প্রজন্মের রাজনীতিবিদ— যিনি নিজের সন্তানকে স্তন্যদানের ছবি পোস্ট করেন। যা নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। আবার পাস্তার রেসিপিও দেন।

তাঁর আমলেই বাড়ানো হয়েছে পিতৃত্ব-মাতৃত্বকালীন ছুটি। স্কুল ছেড়ে যাওয়া বয়সও বাড়িয়ে আঠারো করা হয়েছে।

কোভিডের সময় যে ভাবে তিনি সঙ্কট সামলেছেন, তা প্রশংসিত হয়েছে।

তবে রাশিয়ার সঙ্গে দ্বন্দ্ব নিয়ে টানাপড়েনের জেরে তিনি বিশ্ব রাজনীতিতে আলোচিত ব্যক্তি। সম্প্রতি তিনি নেটোয় যুক্ত হওয়ারও উদ্যোগ নিয়েছেন। সে কারণে রাশিয়া যদি হামলা চালায় তবে পাশে থাকবে সুইডেন। তাদের সঙ্গে একটি চুক্তিও হয়েছে সম্প্রতি।

 

সূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন

 

 

 

Check Also

নওগাঁ এডুকেশন ফাউন্ডেশনের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

নওগাঁ প্রতিনিধি: বেসরকারী কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষে নওগাঁ এডুকেশন ফাউন্ডেশনের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *