রুহুল আমিন সরকার, বাগাতিপাড়া (নাটোর):
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা হেডকোয়াটার ও পৌরসভার প্রধান ও জনগুরুত্বপূর্ণ বাগাতিপাড়া-নাটোর জেলা সড়কের ৫নং ওয়ার্ডের সোনাপাতিল মহল্লার আড়াই’শ মিটার জুড়ে ছোট-বড় খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়ে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। চলতি বর্ষা মওসুমে এই ভাঙ্গা স্থানগুলোতে পানি জমে এই দুর্ভোগের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
সরেজমিনে গিযে দেখা যায়, উপজেলার প্রাণকেন্দ্র মালঞ্চি বাজার থেকে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রবেশ দার হওয়ায় এই জনগুত্বপূর্ণ সড়কের প্রায় চার কিলোমিটার সড়ক প্রশ্বস্তকরণ ও সংস্কার কাজ ২০১৮ মে মাসে এল.জি.ই.ডি থেকে করা হয়। তার বছর খানেক পরেই সোনাপাতিল মহল্লার এই অংশটুকু ভেঙ্গে যায়। প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে খানা-খন্দেরে স্থান গুলোতে ক্ষণস্থায়ী সমাধান হিসেবে ইটসূরর্কী-বালু ফেলা হয়। কিন্তু এর ফলে বছরজুড়ে পথচারীদের দূর্ভোগ পোহাতে হয়।
স্থানীয় শিক্ষক (অবঃ) আবু বকর গেদু বলেন, সড়কটি সংস্কার করা হলেও সুষ্ঠ পরিকল্পনার অভাবে পরের বছরই বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে ছোট-বড় খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়। পৌর এলাকার হলেও এই এলাকায় পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে ওই সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ হয়ে দ্রæত সড়কটি নষ্ট হয়ে, স্বীকার হচ্ছে দূর্ঘটনা। তাতে দীর্ঘদিন ধরে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয়রা। তাই ড্রেনেজ ব্যবস্থার পাশাপাশি সড়কটির ওই অংশ রড দিয়ে আরসিসি ঢালাইয়ের মত স্থায়ী ও টেকসই ব্যবস্থার প্রয়োজন।
সোনাপাতিল মহল্লার ভ্যান চালক রাশেদুল বলেন, সড়কটি ভাঙ্গার ফলে মালপত্র আনা-নেয়া করা কষ্টকর। মাঝে মধ্যে মালবোঝাই ভ্যানের চাকা দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এছাড়া তাঁর মতো অনেকেই এমন দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে বলেও জানান । মালঞ্চি বাজার মস্জিদের ইমাম আমজাদ হোসনে বলেন, সড়কটি দিয়ে বর্ষার সময় যাওয়ার উপায় থেকে না। কাঁদা পানিতে একাকার হয়ে থাকে, কয়েক দিন পোশাকে কাঁদায় মাখায় অযু নষ্ঠ হয়ে নামায আদায়ে ভোগান্তিতে পড়েন তিনি।
উপজেলা হাসপাতালের এম্বুলেন্স চালক মাসুদুল হক বলেন,বাগাতিপাড়া-নাটোর জেলা ও রাজশাহীর প্রধান ও জনগুত্বপূণ সড়ক এটি।তাই জরুরী রোগী হাসপাতালে আনা-নেওয়ার করতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই এম্বুলেন্সে থাকা রোগীদের অক্সিজেন মাস্ক খুলে যাওয়ায় চরম দূর্ভোগে পোহাতে হয়।
উপজেলা প্রকৌশলী আজিজুর রহমান বলেন, পৌরসভার আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় তাদের অনুমতি নিয়ে প্রশ্বস্তকরণ ও সংস্কার কাজটি আমরা করি,সড়কটি পৌরসভার অধীনে তাই দেখভাল ও রক্ষনাবেক্ষণ করাসহ সবদায় পৌরসভা করবে বলে জানান তিনি। তবে জনগুরুত্বের কথা বিবেচনা করে এল.জি.ডির মাধ্যমে আবারও সড়কটি সংস্কার করার সুপারিশ করেছি ,তবে কাজটা মুলত পৌরসভার।
এব্যাপারে সাবেক পৌর মেয়র মোশাররফ হোসেন বলেন, সড়কটি পৌরসভার অধীনে হলেও আমরা গত ২০২১-জুনে ডিসি স্যারের চিঠি মারফত এর মালিকান পাই। প্রথমে মালঞ্চি বাজারের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স থেকে ডাঃ হাফিজুর রহমান বাদশা’র বাড়ি পর্যন্ত সড়কটি রড সম্বলিত আরসিসি ঢালাই দিয়ে এবং পরবর্ততে মালঞ্চী রেলগেট থেকে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স পর্যন্ত হবে মর্মে গুরুত্বপূর্ণ নগর উন্নয়ন প্রকল্পে দিয়েছিলাম ,কিন্তু বর্তমান মেয়র লেলিন তা বাদ দিয়েছে। এটা বড়ই দুঃখ্য জনক! ইউ.এন.ও প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, সড়কটি এতদিন এলজিইডি থেকে সংস্কার করলেও এখন পৌরসভা থেকে করবে। সড়কের আইডি দিয়ে এ সংক্রান্ত একটি চিঠিও এলজিইডি থেকে পৌরসভাকে দেওয়া হয়েছে। অল্প দিনের মধ্যেই সড়কটির সংস্কার কাজ পৌরসভা শুরু করে জেলা সদরের প্রধাণ সড়ক হিসাবে যোগাযোগের গতি আরও বেগবান হবে বলে আশাবাদী তিনি।
পৌর মেয়র শরিফুল ইসলাম লেলিন গুরুত্বপূর্ণ নগর উন্নয়ন প্রকল্প থেকে রাস্তাটি বাদ দেয়ার কথা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, সড়কটি পৌরসভার অধীনে বাগাতিপাড়া-নাটোর প্রধান সড়কের অংশ হলেও একই ওয়ার্ডে এত টাকা বরাদ্দ দিতে ১,৩,৬ ও ৯ নং কাউন্সিলরদের আপত্তি থাকায় অর্থ বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।তবে এটা গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়ায় আমি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে মাধ্যমে কাজটি করার জন্য আবেদন করেছি বলে দাবি করেন তিনি।