সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪ ১১:২৫ পূর্বাহ্ণ
সর্বশেষ সংবাদঃ

ঠাকুরগাঁওয়ে মহাসড়কগুলো যেন মৃত্যুফাঁদ!

 


ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃঃ

ঠাকুরগাঁও জেলার প্রধান প্রধান সড়ক সহ জেলার গ্রামাঞ্চলের পাকা সড়ক গুলোতে বর্তমানে ধান মাড়াই, ধান ও খড় শুকানো হচ্ছে। প্রধান সড়কের অর্ধেক রাস্তা খড় ও ধান দিয়ে ব্লক করা হয়েছে। এর ফলে সড়কে চলাচল করতে চরম বিপাকে পড়ছেন ও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন সব ধরনের যানবাহনের গাড়ি চালকরা।


ঠাকুরগাঁও জেলার ৫ টি উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে এমন দৃশ্য। সকাল হলেই বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও জেলার ঠাকুরগাঁও-বালিয়াডাঙ্গী মহাসড়কের কৃষকরা ক্ষেত থেকে ধান কেটে রাস্তায় মাড়াই করে ও রাস্তার উপরে দু’পাশেই ধান ও ধানের খড় শুকাচ্ছেন সন্ধ্যা পর্যন্ত। আর বিকাল থেকে শুরু হয় রাস্তায় ঢেলে দেওয়া ধান বস্তায় করে তুলে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতা। খড় গুলো রাস্তার পাশে বড় বড় স্তুপ করে রাখেন। বিগত কয়েক বছর ধরে এভাবেই বিভিন্ন ফসল মাড়াই ও শুকানোর কাজ করছেন স্থানীয় কৃষাণ-কৃষাণীরা।


প্রতি বছর ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন সড়কে বিভিন্ন ফসলের মৌসুমে এ ভাবে রাস্তাগুলোর অর্ধেক জায়গা দখল করে ফসল শুকানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে সড়ক গুলোতে গাড়ি চলাচলের রাস্তা সুরু ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। গাড়ি অভার টেকিং করা সহ নানা ধরনের সমস্যা সম্মুখীন হচ্ছে । ফলে সড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এতে অহরহ দূর্ঘটনা ঘটছে বলে জানা যায়। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন সড়কে চলাচলকারী ও গাড়ি চালকরা। রাস্তা থেকে এসব দ্রুত অপসারণ করার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেন তারা। সড়কে যেন এভাবে কোন ফসল শুকানো না হয় সে বিষয়ে প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক মোটরসাইকেল চালক।তিনি বলেন, রাস্তার উপর দু’পাশে বিভিন্ন সময় ধান,গম, ভূট্টা, ধানের খড় শুকানোর ফলে অনেক ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। মাহিন্দ্র গাড়ী চালক বাবুল হক বলেন, এভাবে রাস্তার উপরে ধান ও খড় শুকানোর ফলে গাড়ির ব্রেক ঠিকমত কাজ করে না, গাড়ি স্লিপ করে চলে যায়। এভাবে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার ফলে প্রাণহানি হচ্ছে। মোটরসাইকেল আরোহী রাজিউর রহমান রাজু বলেন, সড়কে এভাবে ধান ও খড় শুকানোর ফলে রাস্তায় চলাচলের সময় অনেক মানুষের বিপদ হচ্ছে। এ বিষয়ে জরুরিভাবে প্রশাসনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
জাহাঙ্গীর আলম নামে অপর এক ব্যক্তি বলেন, ধান,খড় দিয়ে রাস্তায় মরণ ফাঁদ তৈরি করা হয়েছে। এভাবে দূর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রতিনিয়ত মানুষ মারা যাচ্ছে কিন্তু প্রশাসনের দেখার কেউ নেই।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়িতে জায়গা সংকটের কারণে কৃষকরা বাধ্য হয়ে রাস্তার উপর ধান মাড়াই করে ধান ও খড় শুকাচ্ছেন বলে তারা জানান । শাহিন নামে এক কৃষকের কাছে রাস্তায় ধান ও খড় শুকানোর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাড়িতে জায়গা নেই। তাই উপায়ান্ত না পেয়ে বাধ্য হয়ে রাস্তায় এগুলো শুকাচ্ছি। রশিদুল নামে অপর এক কৃষক বলেন, এখন বর্ষাকাল, বৃষ্টির কারণে বাড়ির আঙিনা
কাঁদা হয়ে গেছে এজন্য জীবনের ঝুঁকি থাকলেও গো খাদ্যের জন্য খড় রাস্তায় শুকাইতে হচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মোঃ মাহবুবুর রহমানকে রাস্তার উপরে ধান ও খড় শুকানোর বিষয়টি অবগত করা হলে তিনি বলেন, রাস্তার উপর এভাবে ধান শুকানোর কোনো সুযোগ নেই। রাস্তায় ধান ও খড় শুকানোর ফলে দুর্ঘটনার প্রবণতা অবশ্যই সৃষ্টি হতে পারে। তাই এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের মাধ্যমে মানুষদের সচেতন করা হবে। যাতে তারা রাস্তায় ধান ও খড় না শুকায়।

Check Also

নওগাঁ এডুকেশন ফাউন্ডেশনের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

নওগাঁ প্রতিনিধি: বেসরকারী কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষে নওগাঁ এডুকেশন ফাউন্ডেশনের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *