নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া:
উজান থেকে আসা ঢল এবং কয়দিনের বর্ষণে বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার ৩ উপজেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। চরাঞ্চলের ৮৫৪ হেক্টর ফসলী জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ। ৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করায় অধিকাংশ বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলার মথুরাপাড়া পয়েন্টের পানি উন্নয়ন বোর্ডের রিডার পরশুরাম জানান, রোববার বিকেল ৩টায় সারিয়াকান্দির মথুরাপাড়া পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপদ সীমানার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীতে ১৩সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তাহমিনা বেগম জানান, জেলার সোনাতলা, সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলার ৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি বিদ্যালয়ে প্রবেশ করায় বেশিকিছু বিদ্যালয়ে ক্লাস বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যে সোনাতলায় ১৫টি, ধুনটে ৪টি এবং সারিয়াকান্দিতে ২৮টি বিদ্যালয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) এনামুল হক জানান, বন্যায় এযাবত ৮৫৪ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এরমধ্যে সোনাতলায় ৯৬ হেক্টর, সারিয়াকান্দিতে ৭১০ হেক্টর এবং ধুনটে ৪৮ হেক্টর জমি।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিম জানান, নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও এখনো বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এপর্যন্ত উপজেলঅর চরাঞ্চলের ৬ ইউনিয়নের ৬১ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। উপজেলার চরাঞ্চলের ফসলী জমি প্লাবিত হলেও বসতবাড়ীতে পানি প্রবেশ করেনি। সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ত্রাণ সামগ্রী প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও দূর্যোগ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া জানান, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও এখনো সেই অর্তে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।
দূর্গত এলাকায় উদ্ধার তৎপরতার জন্য সারিয়াকান্দি উপজেলার কালীতলা ঘাট ও সোনাতলার পাকুল্যায় দুটি স্পীডবোট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জরুরী পরিস্থিতির জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ২০ লক্ষ টাকা এবং ৬০০ মেট্রিক টন চাল মজুদ রাখা হয়েছে।