নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া
বাজারে যখন সারের খুচরা মূল্য নিয়ে কৃষকের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে ঠিক সেই মুহুর্তে বগুড়ায় অবৈধভাবে মজুদ করা প্রায় ১৭ হাজার বস্তা সার জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এর মধ্যে কিছু সার নষ্ট বলে জানাগেছে।
রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বগুড়া সদর উপজেলার এরুলিয়া এলাকায় মঞ্জুকরিম ট্রেডার্সের গোডাউনে মজুদ করা এই সার জব্দ করা হয়। এসময় গোডাউন সিলগালা ছাড়াও দুইটি ট্রাক ভর্তি সার জব্দ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গোডাউনের মালিক নাজমুল পারভেজ কনক এসময় পলাতক ছিলেন।
বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও) সমর কুমার পাল জানান, বগুড়া সদর উপজেলায় যে সকল সার বিক্রয়কারী ডিলার রয়েছেন তার মধ্যে নাজমুল পারভেজ কনকের নাম নেই। তিনি অবৈধভাবে ডিএপি ও ইউরিয়া সার মজুদ করে আসছেন এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এসময় গোডাউন ভর্তি অবৈধভাবে মজুদ করা আনুমানিক ১২ হাজার বস্তা ডিএপি ও ইউরিয়া সার জব্দ করা হয়। এছাড়া দুইটি ট্রাক যার একটি সম্পূর্ণ ভর্তি এবং একটি খালি ট্রাকও জব্দ করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় বগুড়া সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুরুল ইসলাম, এরুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আতিকসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ইউএনও জানান, এরুলিয়া বাজারে অবৈধভাবে সার মজুদ রয়েছে- এমন গোপন সংবাদ ছিল। এ তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে গিয়ে গুদাম ঘর ভর্তি সরকারি রাসায়নিক সার পাওয়া যায়। কিন্তু এই সার সদরের কোনো ডিলারের নয়। গুদামের সামনে প্রতিষ্ঠানের কোনো সাইনবোর্ডও নেই। ইউএনও বলেন, বগুড়া সদরে যে ২২ জনের নামে সারের ডিলারশিপ রয়েছে তার মধ্যে নাজমুল পারভেজের নাম নেই। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ডিলারের এলাকার বাইরে সার গুদামজাত করার বিধান নেই। তিনি জানান, অভিযানে ১২ থেকে ১৪ হাজার বস্তা সার পাওয়া গেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউরিয়া ও ডিএপি সার। এ ছাড়া আরও ৫ থেকে ৭ হাজার বস্তা নষ্ট সার রয়েছে গুদামে। সব মিলে ১৬-১৭ হাজার বস্তা হবে। এ ছাড়া একটি সার ভর্তি ট্রাক ও একটি খালি ট্রাক জব্দ করা হয়।
ইউএনও সমর কুমার পাল বলেন, নষ্ট সার দেখে ধারণা করা হচ্ছে- এখানে নকল সার উৎপাদন করা হতো। সারের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছেনা। এ জন্য গুদাম সিলগালা করা হয়েছে। গুদামের নিরাপত্তা প্রহরী মজিবর রহমান বলেন, গত ২ বছর ধরে তিনি এখানে চাকরি করছেন। কিন্তু আগে কখনও সার দেখেননি। গত এক মাস আগে গুদামে সার মজুদ করা হয়েছে হয়েছে বলে তিনি জানান।