মাওঃ মোঃ মোনায়েম হোসাইন:
শাওয়াল মাসের রোযাঃ রামাদানের পরের মাস হলো শাওয়াল মাস। রামাদানের পরবর্তী মাস হওয়ার কারণে এ মাসের গুরুত্ব অনেক। এ শাওয়াল মাসে ছয়টি রোযা রাখার ব্যাপারে বিশ্বনবী (সাঃ) বলেছেন – عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الأَنْصَارِيِّ، – رضى الله عنه – أَنَّهُ حَدَّثَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمَّ أَتْبَعَهُ سِتًّا مِنْ شَوَّالٍ كَانَ كَصِيَامِ الدَّهْرِ ” . আবূ আইয়ূব আল আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ: রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ রমাযান মাসের সিয়াম পালন করে পরে শাও্ওয়াল মাসে ছয়দিন সিয়াম পালন করা সারা বছর সওম পালন করার মত। (ই.ফা. ২৬২৫, ই.সে. ২৬২৪) সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২৬৪৮
এ হাদিসের ব্যখায় মুহাদ্দিসিনে কিরাম বলেন, রমজানের ৩০টি রোজার সঙ্গে শাওয়ালের ছয়টি রোজা যুক্ত হলে মোট রোজার সংখ্যা হয় ৩৬টি। আর প্রতিটি পুণ্যের জন্য ১০ গুণ সওয়াব রয়েছে। যেমন মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনের সুরা আনয়ামের ১৬০ নং আয়াতে বলেন – مَنْ جَآءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهٗ عَشْرُ اَمْثَالِهَاۚ وَ مَنْ جَآءَ بِالسَّیِّئَةِ فَلَا یُجْزٰۤى اِلَّا مِثْلَهَا وَ هُمْ لَا یُظْلَمُوْنَ যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে হাযির হবে সৎকাজ নিয়ে তার জন্য রয়েছে দশগুণ প্রতিফল আর যে ব্যক্তি অসৎকাজ নিয়ে আসবে সে ততটুকু প্রতিফল পাবে যতটুকু অপরাধ সে করেছে এবং কারোর ওপর জুলুম করা হবে না। >>
এ হিসাবে যে ব্যক্তি রমজানের এক মাস রোজা রাখল, সে ১০ মাস রোজা রাখার সাওয়াব পাবে। আর ছয়টি রোজার ১০ গুণ ৬০ দিন। অর্থাৎ দুই মাস। আর এ দুই মাস মিলে ১২ মাস রোজার সাওয়াব। তাহলে ৩৬টি রোজার ১০ গুণ হলে ৩৬০টি রোজার সমান (এটি পুরস্কারের দিক থেকে)। অর্থাৎ সারা বছর রোজার সমান সাওয়াব হবে।’ সুবহান আল্লাহ!! >>
হজরত সাওবান (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘রমজানের রোজা ১০ মাসের রোজার সমতুল্য আর (শাওয়ালের) ছয় রোজা দুই মাসের রোজার সমান। সুতরাং এ হলো এক বছরের রোজা। (নাসায়ি শরিফ, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা. ১৬২) হজরত উবাইদুল্লাহ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ, আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব?’ তখন রাসুলুলল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তোমার ওপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে। কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে রমজানের রোজা রাখো এবং রমজান-পরবর্তী শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখো, তাতেই সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে। (তিরমিজি শরিফ, খন্ড, ১ পৃ.১৫৭।
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের ৩০টি রোজা রাখার তাওফিক দিয়েছেন এখন আমরা শাওয়ালের ছয়টি নফল রোজা আদায় করি। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন, আমিন।
মাওঃ মোঃ মোনায়েম হোসাইন
ইনায়েতপুর দাখিল মাদ্রাসা, নওগাঁ সদর, নওগাঁ।