অনলাইন ডেস্ক:
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণে তিরস্কার সূচক লঘুদণ্ডের শাস্তি পেয়েছেন র্যাবের একসময়কার আলোচিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
১২ বছরের বেশি সময় ধরে প্রশাসন ক্যাডারে কর্মরত থাকলেও পদোন্নতি হয়নি সারওয়ারের। ‘পদোন্নতিবঞ্চিত’ হওয়ায় গত বছরের ৮ মার্চ ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন সারওয়ার আলম।
সেখানে তিনি লিখেছিলেন— ‘চাকরি জীবনে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী অন্যায়, অনিয়মের বিরুদ্ধে লড়েছেন, তাদের বেশিরভাগই চাকরি জীবনে পদে পদে বঞ্চিত ও নিগৃহীত হয়েছেন এবং এ দেশে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াটাই অন্যায়।’
ওই স্ট্যাটাস দেওয়ার পর সারওয়ারকে বিচারের আওতায় আনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ২০২১ সালের ৩০ জুন এ নিয়ে বিভাগীয় মামলা হয় এবং তার কাছে কৈফিয়ত তলব করা হয়। তবে সারওয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনে কোনো লিখিত বক্তব্য দেননি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘একজন সরকারি কর্মচারী হয়ে সরকার ও কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এ ধরনের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করার মাধ্যমে অকর্মকর্তাসুলভ আচরণ করেছেন সারওয়ার আলম। এতে জনপ্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ায় ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’-এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে গত বছরের ৩০ জুন অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী পাঠিয়ে কৈফিয়ত তলব করা হয়।
সারওয়ার আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে, তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায় সারওয়ার আলম ফেসবুকে মন্তব্য করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে আনা ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
তাই ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’-এর ৩(খ) বিধিতে বর্ণিত ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিধিমালার ৪(২)(ক) বিধি অনুযায়ী তাকে ‘তিরস্কার’ সূচক লঘুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৭ মার্চ প্রশাসনের ৩৩৭ জন সিনিয়র সহকারী সচিবকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেয় সরকার। এতে বিসিএসের ২৭তম ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের ২৪০ জনকে (ইকোনমিক ক্যাডার বিলুপ্ত হওয়ায় প্রশাসন ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত হওয়া কর্মকর্তাসহ) পদোন্নতি দেওয়া হয়।
কিন্তু ২৭তম ব্যা চের মেধাতালিকায় সামনের দিকে তার সিরিয়াল থাকলেও মো. সারওয়ার আলমকে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি।
মো. সারওয়ার আলম বর্তমানে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে কর্মরত। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকাকালীন তিন শতাধিক সফল অভিযান পরিচালনা করে আলোচিত হন এ কর্মকর্তা ।
তার পদোন্নতি না পাওয়ার ঘটনাটি ওই সময়ের বেশ আলোচিত বিষয় ছিল।
তখন গণমাধ্যমকে মো. সারওয়ার আলম বলেছিলেন, আমার পদোন্নতি না হওয়ার বিষয়টি বিশ্বাস করতে পারছেন না বলে অনেক সরকারি কর্মকর্তা আমাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তারা অবাক হয়েছেন। তবে এটাই বাস্তবতা।