অনলাইন ডেস্ক:
বোলিংটা বাজে হলেও ব্যাট হাতে দারুণ খেলছে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিন শেষে চট্টগ্রাম টেস্টে উজ্জ্বল স্বাগতিক শিবির। তামিম ইকবালের দারুণ সেঞ্চুরির পর জয়ের ফিফটি। এরপর চতুর্থ অবিচ্ছিন্ন উইকেটে লিটন ও মুশফিকের ফিফটিতে দারুণ অবস্থানে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩১৮ রান। প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কা করেছিল ৩৯৭ রান। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে ৭৯ রানে।
দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের রান ছিল বিনা উইকেটে ৭৬। এখান থেকে দলকে ১৬২ রান পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান দুই ওপেনার তামিম ও জয়। লাঞ্চ বিরতির পর মাহমুদুল হাসান জয়কে ফিরিয়ে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন আসিথা ফার্নান্দো। ১৪২ বলে ৯ চারে তিনি খেলেন ৫৮ রানের ইনিংস।
এরপর তামিম পেয়ে যান তার টেস্ট ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরি। ১৬২ বলে বাঁহাতি ওপেনার পূর্ণ করেন সেঞ্চুরি। যেখানে চার ১২টি। টেস্টে ১৬ ইনিংস পর সেঞ্চুরি পেলেন তামিম। সবশেষ ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিলেন ১২৬ রানের ইনিংস। সব মিলিয়ে এটি তার দশম টেস্ট সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তার চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি আছে কেবল অধিনায়ক মুমিনুল হকের, ১১টি। ঘরের মাঠ চট্টগ্রামে তামিমের এটি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। প্রথমটি ছিল সেই ২০১৪ সালের নভেম্বরে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০৯।
তিন নম্বরে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। ২২ বলে ২ রান করে তিনি ফেরেন বিশ্ব ফার্নান্দোর কনকাশন সাব কাসুন রাজিথার বলে। ব্যক্তিগত ১০২ রানের মাথায় জীবন পান তামিম। অফ স্পিনার রমেশ মেন্ডিসের অফ স্টাম্পের বাইরের বল ডিফেন্স করতে গিয়ে মিস করেন তামিম। কট বিহাইন্ডের আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তামিম।
অধিনায়ক মুমিনুল হক প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। আউট হয়ে যান বাজে এক শটে। ডানহাতি পেসার কাসুন রাজিথার লেংথ বল ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন মুমিনুল। কিন্তু ব্যাট ও প্যাডের মাঝে ফাঁক ছিল অনেকটা। সেই ফাঁক গলে বল ভেঙে দেয় স্টাম্প। এই নিয়ে টানা পাঁচ ইনিংসে দুই অঙ্ক ছুঁতে ব্যর্থ হলেন মুমিনুল। ১৯ বলে মুমিনুলের রান মাত্র ২।
ব্যক্তিগত ১১৪ রানের মাথায় আবার জীবন পান তামিম। রমেশ মেন্ডিসকে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন তিনি। বল ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ যায় স্লিপে। তবে কঠিন ক্যাচটা নিতে পারেননি ধনঞ্জয়া ডি সিলভা।
তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশন ভালো হয়নি বাংলাদেশের। প্রথম সেশনে যেখানে ২৮ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে তুলেছিল ৮১ রান। পরের সেশনে ২৫ ওভারে ৬৩ রান তুলতে স্বাগতিকরা হারায় ৩ উইকেট।
অপরাজিত থাকলেও তৃতীয় সেশনে ব্যাট হাতে নামেননি তামিম। ক্র্যাম্পের সমস্যায় তিনি থাকেন সাজঘরে। ২১৭ বলে ১৩৩ রানে অপরাজিত আছেন তামিম। তার ইনিংসে নেই কোনো ছক্কা, চার ১৫টি। দিনের শেষ সেশন দারুণ দক্ষতায় কাটিয়ে দেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। দুজনই ফিফটি করে থাকেন অপরাজিত।
প্রথম ফিফটি করেন লিটন। ৯৭ বলে ফিফটি পূর্ণ করতে তিনি চার মারেন ৮টি। টেস্টে লিটনের এটি দ্বাদশ টেস্ট ফিফটি। বছরের শুরুতে ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরির পর আবার পঞ্চাশ ছুঁলেন তিনি। মাঝে চার ইনিংসে সর্বোচ্চ ছিল ৪১।
এরপর ফিফটির দেখা পান মুশফিকও। ১২৪ বলে ২টি চারে ফিফটিতে পৌঁছান তিনি। মুশফিকের এটি ২৬তম টেস্ট ফিফটি, বাংলাদেশের হয়ে যা সাকিব আল হাসানের সাথে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ৩১টি ফিফটি করে চূড়ায় আছেন তামিম ইকবাল। দিন শেষে লিটন দাস ৫৪ ও মুশফিক ৫৩ রানে আছেন অপরাজিত।