রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার পারইল ইউনিয়নের তিনটি গ্রামে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৭৮টি পরিবারের ভাগ্যে এখনো সরকারী কোন সহায়তা মেলেনি। স্থানীয়া বলছেন, গত পাঁচ দিন অতিবাহিত হলেও আর্থিক সহায়তা পাওয়ার কোন নমুনা খুঁজে পাচ্ছিনা। ফলে বাড়ী-ঘর মেরামত নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
সোমবার দুপুরে হারাইল গ্রামে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়,কেউ বাঁশ কাটছেন আবার কেউ ঘরের চালের উপরে ওঠে ছাউনি ঠিক করছেন। আবার অনেকেই অর্থ অভাবে এখনো খোলা আকাশের নিচে স্ত্রী সন্তান নিয়ে আছেন। আবার কেউ তীব্র রোদের মধৌ ভাত রান্না করছেন। হারাইল গ্রামের ভারত চন্দ্র জানান,ঝরের সময় বাড়ীতে ছিলামনা। তার স্ত্রী আতশি রাণী সাত মাসের শিশু সন্তানসহ মায়ের সাথে ছিলেন। হঠাৎ ঝরে গাছ ভেঙ্গে পরে বাড়ীর উপর । এতে শিশু সন্তানের পাশেই ভেঙ্গে পরে অল্পের জন্য সৃষ্টিকর্তা পরিবারের সদস্যদের প্রাণে রক্ষা করেছে। তার পুরো বাড়ী ভেঙ্গে পরে। রাত থেকেই প্রতিবেশি হারান চন্দ্রে র বাড়ীতে বসবাস করছেন। টাকা যোগার করতে না পারার কারনে বাড়ী করতে পারছেননা। ওই গ্রামের প্রসান্ত কুমার জানান, টাকা পয়সা যোগার করতে দেরি হয়ে গেল তাই কোন রকমে বাড়ী মেরামত করছেন। বিধবা রাধারাণী বলেন,ঝরে সব উরে গেছে। টাকা পয়সা নেই মেরামত করতে পারছিনা। তাই খোলা আকাশের নিচে তীব্র রোদের মধ্যেই ভাত রান্না করছেন।
পরেশ চন্দ্র বলেন, গ্রামে বসবাসরত আমরা সবাই হিন্দু পরিবার। এর মধ্যে প্রায় ৪৫টি বাড়ী লন্ড ভন্ড হয়ে গেছে। অনেকের বাড়ীর তালার উপর থেকে ধান পর্যন্ত বাতাসে উরে গেছে। গত পাঁচ দিন অতিবাহিত হয়ে গেল এখনো আমাদের ভাগ্যে আর্থিক সহায়তা জোটেনি। তিনি বলেন, গ্রামের প্রায় সবাই গরীব এবং অস্বচ্ছল পরিবার। প্রতিটি জিনিস পত্রের দাম লাগামহীন ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই বাড়ী মেরামত করার মতো সবার সার্মথ নেই। অর্থ অভাবে এখনো অনেকেই বাড়ী মেরামত করতে পরেনি। তাই জরুরী ভিত্তিতে সরকারী সহায়তা কামনা করেছেন। স্থানীয় ইউপি মেম্বার মিজানুর রহমান বলেন,ওই তিনটি গ্রামে ঝরে প্রায় ৭৮টি বাড়ী লন্ড ভন্ড হয়ে গেছে। রোববার দিন এক থানার ওসি ছাড়া আর কেউ দেখতে আসেনি। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দিয়েছি।
রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা হাতে পেয়েছি,বরাদ্দ আসলেই পৌছে দেয়া হবে। উল্লেখ্য,গত বৃহস্পতিবার রাত অনুমান সোয়া আটটায় প্রচন্ড ঝরে উপজেলার পারইল ইউনিয়নের হারাইল,সংকরপুর ও কামতা গ্রামের প্রায় ৭৮টি বাড়ী-ঘর লন্ড লন্ড হয়ে যায়। এর মধ্যে শুধু হারাইল গ্রামেই ৪৫টি বাড়ী লন্ড ভন্ড হয়ে যায়। ফলে ঘরের ছাউনি উরে যাওয়ায় ওই রাত থেকেই বৃষ্টির মধ্যে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করেন।