অনলাইন ডেস্ক:
অনেকের ধারণা গরমকালে অপেক্ষাকৃত কম তেল-মশলাযুক্ত খাবার খাওয়ার কারণে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা কম থাকে। প্রকৃত চিত্রটা কিন্তু মোটেও এমন নয়। গরমকালে হালকা খাবার খাওয়া হয় ঠিকই, তবে তাতে ক্যালরির খুব বেশি তারতম্য হয় না। এ ছাড়া এ বাড়ির-ও বাড়ির অনুষ্ঠানসহ বিয়ে বাড়ি দাওয়াত তো বছর জুড়ে লেগেই থাকে।
চড়া রোদের কড়া চাহনিতে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সারাদিন আমরা যেসব চিনিযুক্ত পানীয় গ্রহণ করি, সেগুলো দৈনন্দিন ক্যালরির পরিমাণে যোগ করলে বুঝবেন আসলে শরীরের লাভ কিছুই হচ্ছে না। আপনার ফুড হ্যাবিটস যে রকমই হোক না কেন, সামান্য কিছু ডায়েট প্ল্যানিংয়ে সহজেই এই গ্রীষ্মকালীন ‘ওয়েটগেন’ আটকাতে পারেন।
- আপনার চারপাশে যে ধরনের ফুড চয়েস রয়েছে, তার মধ্যে থেকে স্বাস্থ্যকর অপশন খুঁজে বের করতে চেষ্টা করুন। এমন খাবার যা আপনি আগে কখনও খাননি অথচ পুষ্টিকর, সে রকম খাবার ট্রাই করতে পারেন। এতে স্বাদবদলও হবে আবার পুষ্টিরও অভাব হবে না।
- সপ্তাহের শুরুতেই যদি গোটা সপ্তাহের একটা মোটামুটি মেন্যু প্ল্যান করে নিতে পারেন, তাহলে খুব ভালো হয়। যেমন কোনো দিন রাতে যদি অনুষ্ঠান থাকে বা কোথাও খেতে যাওয়ার প্ল্যান থাকে, সে ক্ষেত্রে সেদিন দুপুরে হালকা স্যুপ বা সালাদ খেতে পারেন। এতে অতিরিক্ত ক্যালরি ব্যালেন্স করতে পারবেন।
- যেখানেই খাবেন, চেষ্টা করুন বেসিক হেলদি রুলস মেনে চলতে। কম তেলের খাবার, অতিরিক্ত সবজি এবং ফল, হোল গ্রেন ইত্যাদি খেতে চেষ্টা করুন। তবে ভুলেও পেট খালি রাখবেন না।
- কোনো অনুষ্ঠান বা নিমন্ত্রণ থাকলে চেষ্টা করুন সেখানে যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে অল্প কিছু খেয়ে নিতে। এতে পেট খানিকটা ভর্তি থাকবে। ফলে তেল-মশলাযুক্ত খাবারও কম খাওয়া হবে।
- সস, মেয়োনেজ, ক্রিমযুক্ত স্যুপ, ভারি সালাদ ড্রেসিং ইত্যাদি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। সালাদ খাওয়ার ক্ষেত্রে ড্রেসিং আলাদাভাবে নিন যাতে পরিমাণমতো মিশিয়ে নিতে পারেন।
- সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাবারের খুব ভালো কম্বিনেশন হলো সি-ফুড। এতে প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, মিনারেল সবই পর্যাপ্ত পরিমাণে পাবেন। স্টার ফ্রায়েড বা ভাপানো সি-ফুড খেতে পারেন। তবে খেয়াল রাখুন যেন তাতে অতিরিক্ত সোডিয়ামযুক্ত সস বা টপিং না থাকে।
- গরমকালে আইসক্রিম, ঠাণ্ডা পানীয় ইত্যাদি খাওয়ার প্রবণতা অনেক বেড়ে যায়। সে ক্ষেত্রে ডাবের পানি, ফ্লেভারড ওয়াটার কিংবা ফ্রিজের ঠাণ্ডা দই বেছে নিতে পারেন। সারাদিন প্রচুর পানি পান করবেন। যেকোনো বেলার খাবার খাওয়ার আগে এক গ্লাস পানি খাওয়া অভ্যাস করুন।
- হালকা স্যান্ডউইচ, মাল্টিগ্রেন বিস্কুট, ফল ইত্যাদি সঙ্গে রাখুন। টুকটাক খিদে পেলে রাস্তার ধার থেকে কেনা খাবারের তুলনায় এগুলো অনেক নিরাপদ।
- অ্যাক্টিভ থাকুন। প্রতিদিন যে জিমে গিয়ে ঘণ্টাখানেক কাটাতেই হবে, এমনটা নয়। অফিসে সিটে বসে না থেকে পায়চারি করা কিংবা অল্প দুরত্বের পথ পায়ে হেঁটে গেলেও কিছুটা শরীরচর্চা হবে। এই ছোট ছোট অভ্যেসগুলো তৈরি করুন। দেখবেন, শরীর সতেজ ও প্রাণবন্ত থাকবে এবং ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।