বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ৭, ২০২৪ ২:৪৯ পূর্বাহ্ণ
সর্বশেষ সংবাদঃ

সিলেট-সুনামগঞ্জে ৫০ লাখ মানুষ পানিবন্দি

অনলাইন ডেস্ক:

পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যায় সিলেট ও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় ৫০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন শনিবার দুপুরে বন্যার ত্রাণ কার্যক্রম নিয়ে সমন্বয় সভায় এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, বন্যা উপদ্রুত অঞ্চল থেকে দুর্গতদের জন্য দ্রুত উদ্ধার করা যায় বা জরুরি ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো যায় সেজন্য প্রশাসনের তরফ থেকে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাহায্য করা হচ্ছে।

উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি শনিবার থেকে নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী ও কোস্টগার্ড যুক্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ইতোপূর্বে প্লাবিত এলাকায়ও বন্যার পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। সুরমা নদীর পর কুশিয়ারা নদীর পানিও বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এতে বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল অব্যাহত রয়েছে।

সিলেট রেল স্টেশনে বন্যার পানি উঠে যাওয়ায় সিলেট থেকে সারাদেশে রেল যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার দুপুরের পর থেকে ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন চলবে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মাইজগাও স্টেশন পর্যন্ত।

সিলেটের আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালও বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। তাই সিলেটের সঙ্গে বাস যোগাযোগও বন্ধ হয়ে গেছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী চলমান বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পরিস্থিতি আরও নাজুক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সিলেটে আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী সমকালকে বলেন, পূর্বাভাস অনুযায়ী অন্তত আরো দু’দিন বৃষ্টিপাত হবে। একই সময়ে উজানেও ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। এতে নদ-নদীর পানি বাড়বে।

তিনি বলেন, শনিবার সকাল থেকে দুপুর অবধি ৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় সিলেটে ১০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯ টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের রেকর্ড অনুযায়ী আজ আরও বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ জানান, পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় নদ-নদীর পানিও বাড়ছে। ফলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।

শনিবার সকাল ৯টায় পাউবোর দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সুরমা নদী সিলেট (নগরী) পয়েন্টে বিপদসীমার দশমিক ৬৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদী কানাইঘাট পয়েন্টে দশমিক ৯৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এদিকে কুশিয়ারা নদী শেওলা পয়েন্টে বিপদসীমার ওপরে দশমিক ২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শেরপুর ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারা এবং অমলসিদ পয়েন্টে সুরমার পানি বাড়ছে।

নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে মানুষ 

শনিবার দুপুরে সিলেট নগরীতে বৃষ্টি থামার পর নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটতে শুরু করেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ।

শনিবার সকাল দশটার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, সিলেটের সোবাহানীঘাট-চালিবন্দর বিশ্বরোড পানিতে তলিয়ে গেছে।

শুধু বিশ্বরোডে নয়, নগরীর সুবিদবাজার রোডসহ একাধিক মূল সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে চালিবন্দর, মিরাবাজার, আগপাড়া, শাহীঈদগাহ, টিবি গেট, কাজলশাহসহ ২০-৩০টি এলাকায় নতুন করে পানি প্রবেশে করেছে। সবমিলিয়ে শতাধিক মহল্লার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এছাড়া নগরীর চারদিকে থৈ থৈ পানি। রাস্তা, দোকানপাট, বাসাবাড়ি, ঘরের মধ্যে পানি। কোথাও কোথাও হাঁটু পানি, আবার কোথাও কোমর পর্যন্ত।

 

Check Also

নওগাঁ এডুকেশন ফাউন্ডেশনের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

নওগাঁ প্রতিনিধি: বেসরকারী কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষে নওগাঁ এডুকেশন ফাউন্ডেশনের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *