মোঃ মামুন অর-রশীদ, ঠাকুরগাঁও থেকে:
ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের আর্ট গ্যালারী মোড়ে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ অপরাজেয়-৭১ এর স্থাপনা চুরি করছে দুর্বৃত্তরা।
সোমবার (২০ জুন) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বঙ্গবন্ধু সড়কের লাগানো মেইন গেট, প্রাচীরের গ্রিল ও প্রাচীর কয়েক লাইন ইট চুরি করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত এই স্মৃতিসৌধটি শহরের টাঙ্গন নদীর তীরে অবিস্থত। প্রতিদিন কয়েকশ দর্শনার্থী সেখানে ভীড় জমান, আড্ডা, মুক্ত বাতাসে শ্বাস নেন। প্রত্যেক জাতীয় দিবসে সেখানে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করা হয়। এছাড়াও ওই সময়ে সেখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানেরও আয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমানে স্মৃতিসৌধের চারপাশের প্রাচীরের কয়েক সারি ইট, মেইন গেট ও লোহার গ্রীলগুলো কে বা কাহারা চুরি করে নিয়ে গেছে। এছাড়াও উত্তর পাশের প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। তাই মুক্তিযেদ্ধা, জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁওবাসী।
গত জেলা আইন শৃংখলা মিটিংয়ে বিষয়টি উত্থাপন হলেও অদ্যাবধি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ঠাকুরগাঁও জেলা আ’লীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন বলেন, বিষয়টি দু:খজনক। এটি সংরক্ষণ করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। এটি মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতি। এটি জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণে গুরুত্ব বহন করে। অপরাজেয় ৭১ এর চারপাশের গ্রিল ও ইট চুরির বিষয়টি খতিয়ে দেখে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা জরুরী বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বদরুদ্দোজা বদর জানান, বিষয়টি জেনেছি। জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জানানো হবে।
উল্লেখ্য যে, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো ঠাকুরগাঁওয়েও নির্মাণ করা হয় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ‘অপরাজেয় ৭১’। স্বাধীনতার ৪২ বছর পর শহরের পাশে টাঙ্গন নদীর তীরে ‘অপরাজেয়-৭১’ নির্মাণ করা হয়। স্মৃতিসৌধটির নকশা ও ডিজাইন করেন প্রকৌশলী শাহরিয়ার আলম এবং ভাস্কর্য নির্মাণ করেন স্বাধীন চৌধুরী। ৭১ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট অপরাজয় ৭১’র বেদীর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৯৭৬ বর্গফুট। বেদীতে ৬টি ধাপ ও সিঁড়ি স্থাপন করা হয়। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ‘অপরাজেয়-৭১’ এর অর্থায়ন করে স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইএসডিও।