নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া:
বগুড়ায় যুমনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি বগুড়ার সারিয়াকান্দি মথুরাপাড়া পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় যমুনার পানি বিপদসীমার ৬২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। প্রতি মুহুর্তে নতুন নতুন এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। ঘরবাড়ী ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে মানুষ। ইতোমধ্যেই ত্রাণ তৎপরতা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা ত্রাণ ও দূর্যোগ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া জানান, এপর্যন্ত জেলার সোনাতলা, সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ১৬ হাজার ৭৮০টি পরিবারের ৭৮ হাজার ৪৪৮জন পানিপন্দী হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে সারিয়াকান্দি উপজেলায় ১১ হাজার ১৮০ পরিবারের ৫৬ হাজার ৭২০জন, সোনাতলায় ৫ হাজার ২০০ পরিবারের ২০ হাজার ১২৮জন এবং ধুনটের ৪০০ পরিবারের ১ হাজার ৬’শ জন মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছেন।
ইতোমধ্যেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ৪৫ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে । এরমধ্যে সারিয়াকান্দিতে ২০ মেট্রিক টনর চাল ও ৫ লক্ষ টাকা, সোনাতলায় ১৫ মেট্রিক টন চাল ও ৩ লক্ষ টাকা এবং ধুনটে ১০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ২ লক্ষ টাকা। জেলা প্রশাসক জিয়াউর হক মঙ্গলবার বিকেলে সারিয়াকান্দি উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি কামালপুর ইউনিয়নের কড়িতলা এবং কালীতলা হার্ট পয়েন্টে আশ্রয় নেয়া বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেন। এসময় জেলা ত্রাণ ও দূর্যোগ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া, সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিম, উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মুন্টু, চন্দনবাইশা ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুন্নবী হিরো উপস্থিত ছিলেন।
ধুনট থেকে নিয়ামুল ইসলাম জানান, উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন বাবু জানান, এরই মধ্যে তার ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের প্রায় ৮০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে ৪০০ পরিবারের ঘরবাড়ী সম্পুর্ন বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। অবশিষ্ট ৪০০ পরিবারের উঠানে বন্যার পানি পৌঁছেছে। যেকোন সময় এসব পরিবার ঘরছাড়া হওয়ার আশংকা রয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ মেট্রিক টন চাল এবং শুকনা খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বুধবার জেলা প্রশাসক উপস্থিত থেকে ত্রাণ বিতরণ করবেন।