সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪ ৩:০২ অপরাহ্ণ
সর্বশেষ সংবাদঃ

সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ

ন্যাশনাল ডেস্ক:

বেতন-ভাতা (মাইলেজ) সংক্রান্ত দাবি পূরণ না হওয়ায় সারাদেশে ধর্মঘট পালন করছেন রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে আজ বুধবার ভোর ৬টা থেকে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ধর্মঘট ডাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

রেলওয়ের রানিং স্টাফ (চালক-গার্ড) ও শ্রমিক-কর্মচারী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান জানান, অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের দাবি মেনে না নেয়ায় চালকরা কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। ট্রেনের লোকো মাস্টার ও রানিং স্টাফ কর্মচারীরাও কর্ম বিরতিতে গেছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে হঠাৎ করে ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। পূর্বঘোষণা ছাড়াই ট্রেন চলাচল বন্ধ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কমলাপুর রেলস্টেশনে আগত যাত্রীরা।

জানা গেছে, রেলের চাকা সচল রাখতে একজন চালককে দিনে গড়ে ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা ট্রেন চালাতে হয়। এজন্য তাদের বাড়তি মজুরি ও পেনশনে ৭৫ শতাংশ টাকা দেয়া হয়। বেতনের বাইরেও যত মাইল দায়িত্ব পালন করেন এবং অতিরিক্ত সময় কাজ করেন, তার জন্য নির্দিষ্ট হারে ভাতা পেয়ে থাকেন তারা।

এটা রেলে ‘মাইলেজ ভাতা’ হিসেবে পরিচিত।

সম্প্রতি রেলের অতিরিক্ত এ সুযোগ-সুবিধা কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে ক্ষুব্ধ হন রেল চালকরা। এর আগে আট ঘণ্টার বেশি কাজ না করার ঘোষণাও দেন। এ কারণে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের আশঙ্কাও দেখা দেয়।

রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, সার্বক্ষণিক হিসেবে আখ্যায়িত করে বৃটিশ আমল থেকে চলন্ত ট্রেনে দায়িত্ব পালন করা চালক, গার্ড ও টিকিট চেকারদের বিশেষ আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়। অতিরিক্ত সময়ে প্রতি ১০০ কিলোমিটার ট্রেন চালালে দেওয়া হয় মূল বেতনের একদিনের সমপরিমাণ টাকা। পেনশনের সঙ্গে দেওয়া হয় বাড়তি ৭৫ শতাংশ টাকা।

এসব চালক ও গার্ডদের বেতন-ভাতা দেওয়া হতো রেলওয়ের স্বতন্ত্র কাঠামোয়। কিন্তু গত বছরের ৩রা ডিসেম্বর সফটওয়্যার ‘আইবাস প্লাস প্লাস’র মাধ্যমে রেলের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে রেলওয়ের পরিবহন বিভাগের (রানিং স্টাফ) আগের সেই ‘মাইলেজ’ সুবিধা থাকছে না।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওই সিদ্ধান্ত জানার পর মাইলেজ সুবিধা চালুর দাবিতে নিয়মিত বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সভা করেন চালক, গার্ড (ট্রেন পরিচালক) ও টিকিট চেকারেরা। তারা রেলমন্ত্রী, রেলওয়ের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি একাধিক সভাও করেন।

গত ১০ এপ্রিল সিনিয়র সহকারী সচিব শামীম বানু শান্তি স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপর্যুক্ত বিষয় ও সূত্রের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, বেসমারিক কর্মচারীদের পেনশন ও আনুতোষিক হিসাবের ক্ষেত্রে মূল বেতনের সঙ্গে কোনো ভাতা যোগ করার সুযোগ নেই বিধায় রেলওয়ের রানিং স্টাফদের মূল বেতনের সঙ্গে ‘রানিং ভাতা’ পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা প্রদানের প্রস্তাবে নির্দেশক্রমে পুনরায় অর্থ বিভাগের অসম্মতি জ্ঞাপন করা হলো। এমন ঘোষণার পর ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন রেলের রানিং স্টাফরা। এর প্রতিবাদে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেন তারা।

Check Also

শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব

অনলাইন ডেস্ক: দেশের কল্যাণ, দুনিয়া ও আখেরাতের শান্তি কামনা করে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *