ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ
পঞ্চগড়ে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে দুই পরীক্ষার্থীসহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পঞ্চগড় থানা পুলিশ। গত মঙ্গলবার(৫ জুলাই) রাতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার পর রাতে তাদের আটক করে পুলিশ। পরে ১৯৮০ সালের পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আাইনে তাদের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন-জালিয়াতচক্রের মূল হোতা ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বাবর আলীর ছেলে ও গণউন্নয়ন সমবায় সমিতির পরিচালক জালিয়াতির হোতা বেলাল উদ্দীন (৩৮), প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার পরীক্ষার্থী পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার বড়দাপ এলাকার কলিম উদ্দীনের ছেলে মোকসেদুর রহমান (২৮) ও একই উপজেলার ছোটদাপ এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে আহসান হাবিব (২৮)।
পুলিশ ও প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষার জন্য মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। এর মধ্যে পরীক্ষার্থী মকসেদুর রহমান ও আহসান হাবিবের মৌখিক পরীক্ষার খাতার হাতের লেখার সাথে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয়া হাতের লেখার অমিল পাওয়া যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষায় প্রক্সি পরীক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার কথা স্বীকার করেন তারা। প্রায় ১৮ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রক্সি পরীক্ষার্থীর মাধ্যমে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করে দেয়ার চুক্তি করা হয়েছিল বলেও স্বীকার করেন তারা। আর এই জালিয়াতির মূল হোতা ছিলেন বালিয়াডাঙ্গীর গণউন্নয়ন সমবায় সমিতির পরিচালক বেলাল উদ্দীন। এরপর কৌশলে তাকেও ডেকে এনে তিন জনকে পুলিশের হাতে সোর্পদ করা হয়। পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিয়া পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে দুই পরীক্ষার্থীসহ তিন জনকে গ্রেফতার করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তাদেরকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। বর্তমানে তারা থানা হাজতে রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (৬ জুলাই) আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয় ।
পঞ্চগড় জেলা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ও পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মোঃ জহুরুল ইসলাম বলেন, মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার সময় তাদের হাতের লেখা দেখে প্রাথমিকভাবে আমাদের সন্দেহ হয়। পরে কৌশলে জিজ্ঞাসাবাদে তারা অন্য কাউকে দিয়ে লিখিত পরীক্ষা দিয়েছিলেন এবং এজন্য তারা মোটা অংকের টাকা লেনদেন করেছেন বলেও স্বীকার করেন। এজন্য তাদের আটক করে রাখা হয়। সকলের পরীক্ষা শেষে কৌশলে নিয়োগ পরীক্ষায় এমন জালিয়াতির মুল হোতা বেলাল হোসেনকে ডেকে এনে তিন জনকেই পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।
উল্লেখ্য, বেলাল উদ্দীনের বিরুদ্ধে ঋণ প্রদানের শর্ত হিসেবে ব্লাঙ্ক চেক গ্রহণ করেন। ঋণ পরিশোধের পরও ঋণের টাকা উত্তোলনে বন্ধক রাখা চেক দিয়ে অসংখ্য ব্যক্তির কছে চেক ডিজনারের মামলাসহ মিথ্যা ও ভুয়া মামলা দায়েরের অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুদকসহ বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ তার এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ রয়েছে।