শেরপুর (বগুড়া)প্রতিনিধি :
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার জামাইল হাটের জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ করেছেন ইজারাদার ও স্থানীয়রা। অন্যদিকে হাটের জায়গা নয়, নিজের বৈধ সম্পত্তির উপরেই ঘর নির্মাণ করছেন বলে দাবী করেছেন স্থানীয় আব্দুর রাজ্জাক।
সপ্তাহে প্রতি শুক্রবার ও মঙ্গলবার হাটবার। প্রায় ৪০ বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী এই হাট জমজমাটভাবে লাগায় শতাধিক গ্রামবাসির একমাত্র অর্থনৈতিক লেনদেনের মাধ্যম ছিল। কিন্তু সেই হাটের জায়গা অবৈধ দখলদার ও অবৈধ টোল আদায়কারীদের দৌরাত্বে দখলে আসায় জৌলুশ হারিয়েছে হাটটি। ফলে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন হাটে আসা অসংখ্য ব্যবসায়ীরা।
গত ১ আগস্ট রবিবার সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, শেরপুর উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের জামাইল এলাকায় বিগত ১৯৮৩-৮৪ সালে এ হাটটি গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে হাটটি সরকারিভাবে ইজারা দেয়া হয়। অথচ সেই হাটকে নিজনামে সম্পত্তি বলে দাবী করেন অনেকেই। ফলে দিনে দিনে দখল করে নেয়ায় সংকুচিত হয়ে আসছে ওই হাটের জায়গা।
এ দিকে সম্প্রতি হাটের পাশেই ২০০ ফুট পাকা দোকান ঘর নির্মাণ করা শুরু করেছেন আব্দুর রাজ্জাক নামে এক স্থানীয় ব্যক্তি। তিনি একই এলাকার মৃত রমজান আলী আকন্দের ছেলে। অবৈধভাবে ঘর নির্মাণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন হাটের ইজারাদার আলহাজ্ব শেখ। সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এদিকে ওই এলাকার আব্দুর রাজ্জাক তার নিজের জায়গা দাবী করে ঘর নির্মাণ করছেন। এসময় তিনি বলেন, ‘এখানে হাটের কোনো জায়গা নেই। আমার বাবা স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ৬৮ শতক ও মাদ্রাসাকে ৮৫ শতক জায়গা দান করেছিলেন। দীর্ঘদিন থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গাতেই এই হাট বসছে। আমি আমার ফুফুর কাছ থেকে কেনা জায়গায় ঘর নির্মাণ করছি।
তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ আব্দুর রাজ্জাক হাটের জায়গায় ঘর নির্মাণ করে খাজনা আদায় করছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা মৃত সাখাতউল্লাহ’র ছেলে নুরুল ইসলাম, মৃত ইছাহাক মুন্সীর ছেলে হানিফ উদ্দিন মুন্সী, হাবিল মুন্সীর ছেলে খোদাবক্স, মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে শামছুল হক এবং অবৈধদখল রাজ্জাকের ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন অবৈধ দখল মুক্ত হাট চাই।
ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস সামাদ বলেন, প্রায় ৩৭/৩৮ বছরের পুরানো জমজমাট হাটটি এখন অবৈধ দখলদারদের কারণে ছোট হয়ে আসছে। প্রশাসনের সহায়তা ছাড়া কখনই এ হাটের জৌলুষ ফেরানো সম্ভব নয়।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন খান বলেন, ওই হাটের জায়গা নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তির কথা শুনেছি। এ ছাড়া হাটের জায়গায় অবৈধভাবে ঘর নির্মাণের সময় আমি নিজেই গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে বন্ধ করে দিয়েছি। অনতিবিলম্বে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে এ হাটের দখল মুক্ত করতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছি। অভিযুক্ত ব্যক্তি তাঁর নিজের জায়গা দাবি করায় তাঁকে কাগজপত্র নিয়ে উপজেলা অফিসে আসতে বলেছি। তবে প্রচলিত হাট বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) আইন অনুযায়ী কোনো স্থানে দীর্ঘদিন হাট বসলে তা সরকারি সম্পত্তি হয়ে যায়।