মোঃ মামুন অর-রশীদ, ঠাকুরগাঁও থেকেঃ
ঠাকুরগাঁও জেলায় গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির ডিমের দাম হালিপ্রতি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে প্রতি হালিতে দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। এ ছাড়া হাঁসের ডিমের দাম হালিতে বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। ডিম দরিদ্রদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে বলে জানান ক্রেতা সাধারণ।
জানা যায়, ‘গরিবের প্রোটিন’ হিসেবে মুরগির ডিম এক সপ্তাহ আগে স্থানীয় বাজারে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি হালি ৪৪ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ৪৬ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এখন সেই ডিম পাইকারি পর্যায়ে প্রতি হালি ৫১ টাকা এবং মহল্লার মুদি দোকানে খুচরা পর্যায়ে ৫৬ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৫৬ -৬০ টাকা হালি দরের হাঁসের ডিম খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা দরে। একটি হাসের ডিম কিনতে হচ্ছে ১৮ টাকা ৫০ পয়সা দিয়ে। মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা গেছে,পাইকারি বাজারে লেয়ার মুরগির ডিম প্রতি হালি৫২ – ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি সাদা কক মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি হালি ৫২ টাকা দরে।
শহরের মুদি দোকানগুলোতে এই লেয়ার মুরগির ডিমই প্রতি হালি ৫৩ টাকায়, দেশি মুরগির সাদা এবং হাঁসের ডিম ৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সুমি নামে এক গৃহবধূ শহরের কালীবাড়ি বাজারে ডিম কিনতে এসে জানান, গত শুক্রবার হাঁসের ছোট সাইজের ডিম প্রতি হালি ৫৫ টাকা ও একটু বড় সাইজের ডিম ৬৫ টাকা ধরে কিনেছেন। ১৬ আগস্ট মঙ্গলবার একই দোকানে হাঁসের ডিম ৭৫ টাকা হালি কিনতে হলো। সব কিছুর দাম এতো বেশি বেড়েছে যা আমাদের মতো মধ্যবিত্ত ও দরিদ্রদের পণ্য সামগ্রী ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। তিনি আরো বলেন, ‘তেলের দাম বাড়ার পর নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন লেগেছে।
সবজি থেকে শুরু করে চাল, ডাল, মসলা, সয়াবিন, মাছ, মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। আগে ১৫ হাজার টাকায় সংসারের মাসের খরচ চলে যেত। এখন ২৫ হাজার টাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে। আব্দুর রহিম নামে এক ডিম ক্রেতা বলেন,’যাদের অর্থ সম্পদ আছে তারাই শুধু ভাল মন্দ খেতে পারছেন কিন্তু যারা দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রমজীবী মানুষ তারা আজকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য ভালো-মন্দ খেতেও পারছেন না। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। সরকারের উচিত বিশেষ করে এদিকে নজর দেওয়া। নয়তো মানুষ এভাবে চলতে পারবেন না। যারা মাছ মাংস সেরকম ভাবে কিনতে পারেন না তারা আমিষ হিসেবে ডিমকেই বেছে নিতেন। কিন্তু সামান্য এই ডিমেরও দাম বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ টাকায়। তাহলে মানুষ কি খেয়ে বাঁচবে! তবে দাম বাড়লেও লাভ বাড়েনি বলে দাবি করেছেন ডিম ব্যবসায়ীরা।
তাদের অনেকে বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর পরিবহন খরচ বেড়েছে। এ কারণে ডিমের দাম বেড়েছে। আগে প্রতি হালি ডিমে যে লাভ করেছি, এখনো সেই টাকাই লাভ হচ্ছে না। শহরের কালীবাড়ি বাজারে ভাই ভাই ডিম ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী ও বিক্রেতা সোহেল রানা বলেন, ‘প্রায় ১৫-২০ দিন ধরে ডিমের বাজার চড়া। কয়েক দিন আগে ডিমের দাম যখন কিছুটা কম ছিল তখন ডিম বিক্রয় করে যে লাভ হচ্ছিল এখন ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় সেরকম লাভ হচ্ছে না ও ডিমের বিক্রয়ও কমে গেছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক শেখ সাদি বলেন, খুব শিগগিরই ডিমের বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হবে। যাঁরা অতিরিক্ত দামে ডিম বিক্রি করবেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।