নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর বদলগাছিতে র্যাব-৫, জয়পুরহাট ক্যাম্প এর অভিযানে চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত প্রধান আসামি ঘাতক স্বামীকে ১০ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
১৬ই আগস্ট মঙলবার রাব-৫, – সিপিসি- ৩ জয়পুরহাট র্যাব-ক্যাম্পের একটি চৌকস অপারেশনাল দলের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি অধিনায়ক মোহাম্মদ মাসুদ রানা এবং সহকারি পুলিশ সুপার মোঃ আমিনুল ইসলাম এর নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার চকগোপিনাথ গ্রামের আবদুস সোবাহানকে গ্রেফতার করে বদলগাছি থানায় সোপর্দ করেন।
র্যাবের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, চাঞ্চল্যকর এই গৃহবধূ হত্যা মামলাটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর আগে গত সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকালে গৃহবধূ সাবিনাকে বেধড়ক মারধর করে নির্মম ভাবে নির্যাতন এ ঘটনায় তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ এ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তির করেন। ভর্তির পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঐ রাতে মৃত্যু বরণ করেন ওই গৃহবধু। স্থানীয় ও র্যাবের প্রেস ব্রিফিং সূত্রে জানাযায়, উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের চকগোপিনাথ গ্রামের ( কলকুটির মোড়ে) শাশুড়ি সাহারা খাতুন (৫৫) এর সাথে পারিবারিক কলহের কারণে গৃহবধূর বিবাদ বাঁধে। ঝগড়া চলাকালীন সময়ে ভিকটিম মৃত সাবিনা আক্তারের স্বামী অভিযুক্ত মোঃ আব্দুস সোবাহান (৩৮) তার স্ত্রীকে হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করতে থাকে। এসময় ঐ গৃহবধূ গুরুতর আহত হয়। আহত অবস্থায় প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে জয়পুরহাট আধুনিক সদর হাসপাতলে ভর্তি করেন।কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে ঐ গৃহবধূকে রের্ফাড করেন বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ এ্যান্ড হাসপাতালে। পরিবারের সদস্যরা দ্রুত সেখানে আহত গৃহবধূকে ভর্তি করেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টার সময় গৃহবধূ সাবিনা আক্তার মৃত্যুবরণ করেন বলে কর্মরত চিকিৎসক নিশ্চিত করেন। নিহত গৃহবধূ সাবিনা বেগম (৩২)ওই গ্রামের মৃত মোসলেম উদ্দীনের ছেলে আব্দুস সোবহানের স্ত্রী। সাবিনা বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দির পালক পিতা আজিজুরের মেয়ে ।
প্রতিবেশীরা জানান, সাবিনার স্বামী ও শাশুড়ির তাকে প্রায় নির্যাতন করতো। গত সোমবার ঐ গৃহবধূকে তার স্বামী হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করেছে। গৃহবধূকে নির্যাতনের সময় প্রতিবেশীরা বাঁধাদিতে গেলে গৃহবধূর স্বামী অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে সবাইকে তাড়িয়ে দেয় এবং ঐ গৃহবধূকে নির্মমভাবে পাশবিক নির্যাতন চালায় তার স্বামী । পাষণ্ড স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গোবরচাঁপা বাজার থেকে গ্যাসের ট্যাবলেট কিনে নিয়ে আসে সাবিনা। গ্যাসের ট্যাবলেট খাওয়ার পর সাবিনা বমি করতে লাগলে পরিবারের লোকজন প্রথমে জয়পুরহাট সদর আধুনিক হাসপাতালে এবং পরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ এ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সাবিনা। সাবিনার মৃত্যু হলে হাসপাতালে তার লাশ রেখে সটকে পড়ে স্বামী শাশুড়িসহ বাড়ির লোকজন। সাবিনার মৃত্যু নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে । কেউ বলছে নির্মম হত্যাকান্ড আবার কেউ বলছে পাষণ্ড স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে বিষাক্ত গ্যাস বড়ি খেয়ে আত্মহত্যা করেছে ওই গৃহবধূ – এমনটাই ধারণা করছেন স্থানীয়রা। এ বিষয়ে মথুরাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানা বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-বিবাদের সময় স্বামী ঐ গৃহবধূকে মারধর করলে তার স্ত্রী অভিমান করে গ্যাস বড়ি খেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এ বিষয়ে বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহা.আতিয়ার রহমান বলেন, নিহত গৃহবধূ সাবিনার পরিবারের কেউ এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ বা মামলা কোনটিই করেননি। অভিযুক্ত সোবাহানকে আদালতে চালান করা হবে।