মোঃ আজিজার রহমান:
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনিয়ার ডিপোতে অগ্নিকান্ড ও বিস্ফোরণ। সেই অগ্নিকাণ্ডে কতজন আহত ও নিহত হয়েছে সে পরিসংখ্যান আমাদের এখন পর্যন্ত জানা নেই। কারন সেখানে উদ্ধার কাজ এখনো অব্যহত আছে। বিস্ফোরণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী, বিএম কন্টিইনার ডিপোতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ অনেকে আহত ও নিহত হওয়া নিয়ে দেশের মানুষকে সম্প্রতি আবার ভাবিয়ে তুলেছে।
আরো ভাবিয়ে তুলেছে যদি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এমন একটা দূর্ঘটনা ঘটে তাহলে কি করবো, কোথায় গিয়ে লুকাবো আমরা। কেউ যদি মনে করে থাকেন আপনি ঢাকায় বসে আছেন, রূপপুরের নিউক্লিয়ার দূর্ঘটনায় আপনার কিচ্ছু হবে না। তাহলে ফী সাবিলিল্লাহ পড়ে চুপচাপ বসেই থাকেন! তবে তখন যা ঘটবে যদি প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি না থাকে তাহেলে শুধু ফী সাবিলিল্লাহ পড়ে পার পাওয়া যাবে না, এটায় শতসিদ্ধ কথা প্রসংশা করতে হয় আমাদের ফায়ার ব্রিগেডের সকল সদস্যদের, আসলেই তারা জাতীয় হিরো। এরা ক্ষুদ্র সামর্থ্য দিয়ে নিজেদের সর্বোচ্চ উজাড় করে দিচ্ছেন। না আছে তাদের পর্যাপ্ত ইকুয়েপমেন্ট,না আছে উনাদের উচ্চতর প্রশিক্ষণ। যা আছে তাই নিয়ে যেভাবে তারা দূর্যোগে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদের মূল্যবান প্রাণ বিষর্জন দিচ্ছেন সে জন্যে স্লেউট জানাই ফায়ার সার্ভিসের সকল ফায়ারম্যানদের।
একটা ক্লাস নাইনের সাইন্সের ছেলে পর্যন্ত জানে ক্যামিকেল থেকে লাগা আগুন পানি দিয়ে নেভাতে গেলে সেই আগুন আরো বেড়ে যায়। পুরান ঢাকার নিমতলীতে ক্যামিকেল থেকে যে আগুন লেগে ১০০ এর অধিক মানুষ অঙ্গার হয়ে গেলো, এরপর কত বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন এমন আগুন নেভানোর জন্য আমাদের ফায়ার ব্রিগেডকে প্রস্তুত করা উচিৎ। কে শুনে কার কথা? আমরা সব কিছু ভুলে গেলাম প্রধানমন্ত্রী দুইটা মেয়ের বিয়ে দিচ্ছেন এই ব্রেকিং নিউজের আড়ালে।
রানা প্লাজার ঘটনা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নাই বলে কত অসহায় আমাদের ফায়ার ব্রিগেড। আমরা সব কিছু ভুলে গেলাম নতুন জামা পরিহিত রেশমার রানা প্লাজার নিচ থেকে উদ্ধার নাটক দেখার পরে! কতখানি অসহায় হলে ফায়ার ব্রিগেড এর মুখপাত্র গতকাল রাতে সাংবাদিকদের কাছে আত্মসমর্পণ করে বলতে বাধ্য হন এবং বলেন, এই আগুন কিভাবে নিভাতে হয় আমাদের জানা নাই। থাক, হতাশার কথা না হয় বাদই দিলাম। আমাদের একটা স্যাটেলাইট আছে, আছে আমাদের শত শত কোটি টাকা মূল্যের আরো অনেক উন্নয়ন ।
এটাই বেশ! দেশে আরো কিছু থাক আপত্তি নেই। তবে কয়েকটি দূর্ঘটনার পর পর অনেক বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দিয়েছিলেন ফায়ার সার্ভিসকে আধুনিকায়ন করে সুসজ্জিত করতে। কিন্তু সে সব পরামর্শ কোনো কাজে আসেনি। সরকার যদি এসব পরামর্শ কাজে লাগাতো তাহলে সীতাকুণ্ডে এত প্রাণহানি হয়তো ঘটতো না। তাই এখন সীতাকুন্ডে দূর্ঘটনায় নিহত ও আহত সকলের জন্য সমবেদনা এবং দোয়া করা ছাড়া আমাদের কিইবা করার আছে বলুন ! এতসবের পর আবারো সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি, এখনো সময় আছে ফায়ার সার্ভিসকে শক্তিশালী ও আধুনিকায়ন করুন, আর এটাও উন্নয়নের অংশ বটে।