অনলাইন ডেস্ক:
২০২০ সালের ২৬শে অক্টোবর পারিবারিকভাবে সাদিয়া ও আসাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ভালোই চলছিলো তাদের সংসার। কিন্তু গত ৫/৬ মাস ধরে যৌতুকের টাকার জন্য সাদিয়াকে চাপ দিতে থাকে আসাদ। বাবার বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা না দিলে আগুনে পুড়িয়ে মারবে বলে হুমকি দেয় স্বামী আসাদ। এরপর থেকে যৌতুকের ৫ লাখ টাকার জন্য বিভিন্ন সময়ে সাদিয়ার ওপর পাশবিক নির্যাতন শুরু করে পাষ- স্বামী আসাদ সরকার। নির্যাতন সহ্য করেই এতদিন আসাদের সংসার করছিলেন সাদিয়া। চলতি বছরের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি সাদিয়ার একটি ছেলে হওয়ার কয়েক ঘন্টা পর মারা যায়। এর পর থেকে সাদিয়াকে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দিতে আবারও চাপ প্রয়োগ করে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন
এদিকে, সাদিয়ার বাবা অপুল সরকার প্রবাস থেকে বাড়ি ফিরে বর্তমানে বেকার জীবন যাপন করছেন।
বেকার বাবার কাছে এত টাকা চাইতে পারবেন না বলে জানালে সাদিয়ার ওপর বিভিন্ন সময়ে কয়েক দফা নির্যাতন করে স্বামী আসাদ। গত শনিবার সকাল ৮টার দিকে সাদিয়ার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় স্বামী আসাদ। আগুন দেওয়ার পর প্রতিবেশীদের জানানো হয়, ‘গ্যাসের চুলা থেকে আগুনে দগ্ধ হয়েছে সাদিয়া।
পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে অবস্থা আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। এতদিন এ খবর কেউ না জানলেও বৃহস্পতিবার সকালে বার্ন ইউনিট থেকে সাদিয়া একটি ভিডিওবার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চারদিকে তোলপাড় শুরু হয়।
গত শনিবার সকাল ৮টায় দেবিদ্বার উপজেলার পৌর এলাকার বানিয়াপাড়ায় স্বামীর ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। অগ্নিদগ্ধ সাদিয়া উপজেলার পদ্মকোট গ্রামের মো. অপুল সরকারের মেয়ে। তার স্বামী আসাদ সরকার স্থানীয় গুনাইঘর গ্রামের নুরু সরকারের ছেলে। সাদিয়া আক্তার বর্তমানে ঢাকা শেখ হাসিনা হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আছেন। ঘটনার পর থেকে আসাদ পালিয়ে যায়। পরে দেবিদ্বার থানা পুলিশ গতকাল রাতে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসাদকে গ্রেপ্তার করে।
হাসপাতাল থেকে সাদিয়ার ছোট বোন নাদিয়া আক্তার জানায়, তার বোনকে বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করেছে আসাদ ও তার পরিবার। তার শরীরের প্রায় ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে। কিছু কিছু অংশ পুড়ে শরীরের মাংস পুড়ে হাড্ডিতেও গিয়ে লেগেছে। আপুর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার দুপুরে দেবিদ্বার থানার ওসি আরিফুর রহমান জানান, এ ঘটনায় বুধবার রাতে কয়েকজনের নামে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত স্বামী আসাদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে কুমিল্লা জেল হাজতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।