বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ৭, ২০২৪ ২:৩৯ পূর্বাহ্ণ
সর্বশেষ সংবাদঃ

শেরপুরে করতোয়া নদী থেকে দুই বন্ধুর লাশ উদ্ধার


শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি :

বগুড়ার শেরপুরে করতোয়া নদী থেকে সামাম তাহমিদ ও সাব্বির আহমেদ শিশির নামের দুই বন্ধুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

একজনের লাশ সকালে এবং অপরজনের লাশ দুপুরে উদ্ধার করা হয়। নিহতদের দু’জন শুক্রবার সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ ছিলো।

নিহতদের মধ্যে সামাম তাহমিদ (১৮)উপজেলার বারোদুয়ারি পাড়ার মোজাফফর রহমানের ছেলে এবং শেরউট স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছিলো। অপরজন সাব্বির আহমেদ শিশির গাড়ীদহ ইউনিয়নের মহিপুর জামতলা গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে এবং বগুড়া ক্যান্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিলো।

জানা গেছে, সকাল বেলা ধরমোকামপূর্ব পাড়া এলাকায় করতোয়া নদীর পাড়ে স্থানীয় লোকজন দুর্গন্ধ পেতে শুরু করেন এবং নদীতে একটি লাশ ভাসতে দেখে। পরে তারা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ বেলা সাড়ে ১০টায় এসে লাশটি উদ্ধার করে। লাশের পরনে একটি কালো টি শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা ছিলো। এদিকে দুপুর দেড়টায় দিকে উপজেলার গোপালপুর এলাকায় করতোয়া নদীতে সাব্বিরের লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।

লুৎফর রহমান জানান, গতকাল সকাল থেকে তার ছেলে সাব্বির নিখোঁজ ছিলো। তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও পাওয়া যাচ্ছিলো না। বিকেল ৩টার পর আবারও তার মোবাইলে ফোন দিলে ১০-১২ বছরের এক শিশু ফোন রিসিভ করে। তখন সে জানায় মোবাইল ফোনটি সে আলিয়া মাদ্রাসার পেছনে নদীর ধারে পেয়েছে। এরপর তিনি তাকে মোবাইলটি নিয়ে আসতে বলে তার কাছে শিশুটি মোবাইল ফোনটি পৌছে দেন। এরপর তিনি তার ছেলে নিখোঁজ বলে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, নিহতদের পরিবারের সাথে কথা বলে যতটুকু জানতে পেরেছি তারা দু’জন বন্ধু। এবং দু’জনেই পরিবারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিলো। তারা দু’জনে গত বৃহস্পতিবার ( ০৭ জুলাই) বগুড়া শহরে গিয়েছিলো। রাত সাড়ে ১২টায় বগুড়া থেকে এসে দুই বন্ধু সামামের বাসায় গিয়ে রাতযাপন করে। সকাল ৭টায় তারা দু’জনে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এরপর তার বাড়ির মোড়ের একটি দোকান থেকে কোল্ড ড্রিংকস কিনে সামাম তার মাকে ফোন দিয়ে কোল্ড ড্রিংকসের দাম দিতে বলে। কিন্তু সামামের মা তা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলে তোর কাছে তো টাকা আছেই। তখন সামাম তার মাকে বলে ঠিক আছে তোমাকে আর কোনদিন টাকা দিতে হবেনা এই বলে সে ফোন রেখে দেয়। এদিকে সাব্বির তার পরিবারের কাছে ১০ হাজার টাকা চেয়েছিলো। কিন্তু তার পরিবার তাকে দেয়নি। যে কারণে ওই দিন বেলা সাড়ে ১০টায় সাব্বির সামামের মোবাইল দিয়ে তার মাকে ফোন দিয়ে টাকার কথা জিজ্ঞেস করে টাকা না দিতে চাওয়ায় ফোন রেখে দেয়। এরপর থেকে তারা ফোন আর রিসিভ করছিলো না। দুপুর তিনটার দিকে সাব্বিরের বাবা সাব্বিরের মোবাইলে ফোন দিয়ে একটা ছোট বাচ্চা ফোন ধরলে তাদের নিখোঁজের বিষয়টি জানা যায়। এর আগে বেলা ১২টায় এলাকার ছোট ছোট বাচ্চারা আলিয়া মাদ্রাসা’র পেছনে নদীর পাড়ে খেলতে গিয়ে দুটো মোবাইল, দুই জোড়া স্যান্ডেল পায়।
ওসি শহিদুল ইসলাম আরো বলেন, লাশ দুটো’র গায়ে কোন আঘাতের চিহ্ন ছিলো না। তবে পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার ফলে লাশ ফোলা ছিলো এবং নাক দিয়ে শ্লেষ্মা বের হচ্ছিলো। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তারা আত্মহত্যা করে থাকতে পারে। এরপরেও মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে তাদের দু’জনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Check Also

নওগাঁ এডুকেশন ফাউন্ডেশনের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

নওগাঁ প্রতিনিধি: বেসরকারী কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষে নওগাঁ এডুকেশন ফাউন্ডেশনের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *