মোঃ মামুন অর-রশীদ, ঠাকুরগাঁও :
বাংলাদেশের সোনালী আঁশ নামে খ্যাত পাট নিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের চাষীরা পড়েছেন ভীষণ বিপাকে। এ অঞ্চলের মাটি,পানি,বায়ু পাট চাষের জন্য উপযোগী। সাধারণত দু’ধরনের পাট চাষ হয়। বিগত কয়েক বছর আগে সোনালি আঁশ কৃষকের গলার ফাঁস হলেও বর্তমানে সুদিন ফিরে এসেছে। ফলে কৃষকের পাট চাষের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। বাজার দর ও চাহিদা উভয়ে বেড়েছে ঠিকই কিন্তু এর বিপরীতে চাষীরা ভীষণ হতাশাগ্রস্ত।
কাঁচা পাট থেকে আঁশ ছড়ানোর জন্য ২০/২৫ দিন পুকুর, ডোবা,নালায় ডুবিয়ে রাখতে হয়। এ অঞ্চলের খাস পুকুরগুলো লিজ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে তাই মৎস্যজীবিরা উক্ত পৌখোড়ে ( পুকুরে) পাট জাগ দিতে না দেওয়ায় কৃষকেরা ভীষণ অসুবিধায় পড়েছে। সদর উপজেলার আখানগর ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের আনিসুর বলেন, আমার চার বিঘা জমির পাট কোথায় জাগ দিব ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা। কিন্তু একমাত্র ফেলানপুর গ্রামের চার পৌখোড় ছাড়া অন্য কোথাও পাট জাগ দেওয়া যায় না, দুরত্ব বেশি হওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মধুপুর গ্রামের শামসুল আলম বলেন, আমাদের এলাকার পুকুরগুলো প্রায় পানিশূন্য তাই এবার পাট জাগ দেওয়া খুবই মুশকিল। যদিও এখনো পুরোদমে মৌসুম শুরু হয়নি তবু্ও দুশ্চিন্তা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু হোসেন মুঠোফোনে বলেন, এ বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় আনুমানিক ৭৯০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এ অঞ্চলের কৃষকেরা সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ দেয় তাই পুকুরের অভাবে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে কারণ এখানকার পুকুরগুলো বেশিরভাগ মৎস্য চাষ করা হয়। তিনি আরও বলেন, আধুনিক পদ্ধতি রিবন রেটিংয়ের মাধ্যমে আঁশ ছড়ানো হলে স্বল্প জায়গায় ও স্বল্প পানিতে পাটের আঁশ ছড়ানো সম্ভব। এতে আঁশের গুনাগুনও অটুট থাকে কিন্তু কৃষকেরা এ পদ্ধতির প্রতি অনাগ্রহ হওয়ায়, এর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ।
এলাকার সচেতন মহলের মতে, প্রতিটি এলাকায় সরকার একটি করে খাস পুকুর পাট জাগ দেওয়ার জন্য বরাদ্দ দিলে সোনালী আঁশের সুদিন বিরাজমান থাকবে,পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হবে।