মোঃ মামুন অর-রশীদ, ঠাকুরগাঁও থেকে:
সারাদেশের ন্যায় উত্তরের জনপদ ঠাকুরগাঁওয়ে প্রচন্ড তাপদাহ ও প্রবল খরার কবলে পড়েছে। দিনের শুরু থেকে সূর্যের তাপের প্রখরতা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে। গড়ে প্রতিদিন তাপমাত্রা ৩১°—-৩৮° ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। যারা বের হচ্ছেন তারা তৃষ্ণার চোটে ছটফট করছেন। তাই শুকনো গলা ভিজিয়ে নেওয়ার জন্য বরফ মিশ্রিত আখের রসের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন।
রবিবার (১৭ জুলাই) ঠাকুরগাঁও শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরাস্তায় দেখা যায় ৪/৫ টি আখ মাড়াই মেশিনে আখের রস বিক্রি করছে। প্রতি গ্লাস রস ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। রস বিক্রেতা জসিম উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৪/৫ মণ আখ মাড়াই করে রস বিক্রি করছি। গরম পড়ার আগে এত চাহিদা ছিল না। এখন দিনে ৫/৬ হাজার টাকার রস বিক্রি করছি। পুষ্টিবিদদের মতে, আখের রসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ফলিক এসিড ও প্রোটিন বিদ্যমান। তাই আখের রস খেলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, বিপদজনক কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে, হার্ট ভালো রাখে। গর্ভবতী নারীদের পুষ্টির অভাব পূরণ করে। এছাড়াও লিভার চাঙ্গা রাখতে আখের রসের জুড়ি নাই।
পথচারী আব্দুল লতিফ বলেন,আইজ মুই জমির কাগজের তানে শহরত আসিসনু কিন্তু যে অদ, মোর জানটা ফানা হয় গেল সেই তানে বাঁ এক গেলাস শবরত খানু। এলা মোর কলিজা খান আরাম লাগিল। (অর্থাৎ অত্যাধিক রোদের মাঝে এক গ্লাস শরবত খেয়ে কলিজা ঠান্ডা হয়েছে)।
এ ব্যাপারে ২৫০ শর্য্যাবিশিষ্ট ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোহাম্মদ ফিরোজ জামান জুয়েল বলেন, আখের রস নিঃসন্দেহে ভালো। কিন্তু এটি যে প্রক্রিয়ায় প্রস্তুত করা হচ্ছে সেটি জীবানু মুক্ত কিনা। তাছাড়া যে ব্যক্তি এ কাজটি করছেন তিনি কতটা স্বাস্থ্য সম্মতভাবে আছেন। জনবহুল ও খোলা স্থানে রস প্রস্তুত করা হচ্ছে সেটা কতটা মান সম্মত।
এছাড়া তিনি আরও বলেন, যে বরফ ব্যবহার করা হচ্ছে তার পানি পানের যোগ্য কিনা। যে ব্যক্তি পিপাসা নিবারণের জন্য রস পান করলেন তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত কিনা সেটা ভেবে দেখতে হবে। তাছাড়া তিনি রাস্তার ধারে এ ধরনের রস পান করা থেকে সবাইকে বিরত থাকতে বলেন।