অনলাইন ডেস্ক:
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হামজা শাহবাজের পদ অবৈধ ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। তার জায়গায় বৈধ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ইমরান খানের পিটিআই সমর্থিত পারভেজ এলাহির নাম ঘোষণা করেছেন আদালত।
হামজা শাহবাজ পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হামজা শরীফের ছেলে।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ৯টায় পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি ওমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ এ রায় দেন।
শুক্রবার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের পার্লামেন্টে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে ইমরান খানের পিটিআই প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য মনোনয়ন দেয় মুসলিম লিগ-কিউ এর পারভেজ এলাহিকে।
তিনি মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনে ১৮৬টি ভোট পান। অন্যদিকে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের প্রার্থী হামজা শাহবাজ পান ১৭৯টি ভোট।
কিন্তু পার্লামেন্টর ডেপুটি স্পিকার দোস্ত মোহাম্মদ মাজারী ভোট কম পাওয়া হামজা শাহবাজকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা দেন।
কারণ মুসলিম লিগ-কিউ এর যে দশজন সদস্য পারভেজ এলাহিকে ভোট দিয়েছিলেন তাদের ভোট বাতিল করে দেন। কারণ হিসেবে তিনি জানান, মুসলিম লিগ-কিউ এর দলীয় প্রধান হামজা শাহবাজকে ভোট দিতে বলেছেন। কিন্তু সদস্যরা হামজাকে ভোট না দিয়ে পারভেজ এলাহিকে ভোট দিয়েছেন।
স্পিকার দোস্ত মোহাম্মদ মাজারী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী দলীয় প্রধানের কথার বাইরে ভোট দিলে সে ভোট গণনা করা হবে না।
কিন্তু পিটিআই এবং মুসলিম লিগ-কিউ এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয় দলীয় প্রধান না দলের সংসদীয় কমিটি যেটা বলবে সেটি মানতে হবে। আর মুসলিম লিগ-কিউ এর সংসদীয় কমিটি পারভেজ এলাহিকে ভোট দিতে বলেছেন।
এমন নাটকীয়তার পর শনিবার মধ্যরাতে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হয়ে পিটিশন দায়ের করে পিটিআই।
তাদের এ পিটিশনের জবাবে মঙ্গলবার এ রায় দিয়েছেন আদালত।
সুপ্রিম কোর্ট ডেপুটি স্পিকার দোস্ত মোহাম্মদ মাজারীর রায়কে অবৈধ ঘোষণা করেছেন।
আদালত বলেছেন, দলীয় প্রধান না সংসদীয় কমিটির সিদ্ধান্তই মানবেন আইনপ্রণেতারা।
এর আগে পিটিআই সমর্থিত মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগ করার পর পাঞ্জাবে নতুন মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন হয়। সেখানে পিটিআইয়ের ২৫ জন দলত্যাগীর সমর্থন পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী হন হামজা।
কিন্তু পিটিআই এ ২৫ দলত্যাগীর বিরুদ্ধে আপিল করে। তাদের আইনপ্রণেতার পদ কেড়ে নিতে পিটিশন দায়ের করে।
এরপর পিটিআইয়ের ২০ জন নির্বাচিত আইনপ্রণেতার পদ কেড়ে নেওয়া হয় এবং এসব আসনে নতুন নির্বাচন দেওয়া হয়। এই ২০ আসনের ১৫টিতেই জয় পায় পিটিআই। ফলে ফের পাঞ্জাবের ক্ষমতায় এসে যায় তারা।
কিন্তু ডেপুটি স্পিকারের অবৈধ রায়ের কারণে হামজা শাহবাজ ক্ষণিক সময়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হন।
এই সময়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েই ২৭ জনকে নিয়ে মন্ত্রীসভা গঠন করেছিলেন হামজা শাহবাজ। তাছাড়া বেশ কয়েকজনকে উপদেষ্টা হিসেবেও নিয়োগ দিয়েছিলেন তিনি। এসব মন্ত্রী ও উপদেষ্টাদের পদকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করেছেন আদালত। তাদের সবাইকে অফিস বা কার্যালয় থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন আদালত।