মামুন অর-রশীদ, ঠাকুরগাঁও:
করোনার কারণে গত দুই বছর মার্কেট ও শপিংমল গুলো ঠিকমতো খোলা না থাকায় এবার আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জমে উঠেছে ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমল। প্রিয়জন ও পরিবারের সদস্যদের জন্য কেনা-কাটা করতে ক্রেতারা রাতেও ভীড় করছেন এসব মার্কেট ও শপিংমলে। সম্পূর্ণ ও স্বাভাবিকভাবে এবার মার্কেট খোলা থাকায় ও ক্রেতাদের সমাগমে প্রাণ ফিরে পেয়েছে জেলার ব্যবসায়ীরা।
বুধবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উত্তরবঙ্গের বৃহৎ ও ঐতিহ্যবাহী কাপড়ের বাজার জেলার রাণীশংকৈলের নেকমরদ,বালিয়াডাঙ্গীর লাহিড়ী হাট ও রাত ১১ টায় ঠাকুরগাঁও শহরের নর্থ সার্কুলার রোডের শপিংমল গুলোতে ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা যায়। নেকমরদ বাজারের নবাব ক্লথ ষ্টোরের কাপড়ের ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ‘গতবছর করোনার কারণে দোকান ঠিক মতো খুলতেই পারিনি। তাই বেচা-বিক্রয়ও তেমন হয়নি। তবে এবার মার্কেট খোলা থাকায় ক্রেতাদের সমাগম বেড়েছে। অন্যান্য জিনিসের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় এবার কাপড়েরও কিছুটা দাম বেড়েছে। গতবার যে শাড়ি আমরা বিক্রয় করেছিলাম সাড়ে ৯শ টাকা। সেই শাড়ি এবার আমাদেরকেই কিনে আনতে হয়েছে সাড়ে ৯শ টাকায়। দাম বৃদ্ধির ফলে ক্রেতাদের বোঝাতে একটু কষ্ট হয়।
অন্যদিকে ঠাকুরগাঁও শহরের নর্থ সার্কুলার রোডের সততা বস্ত্রালয়ে মাদ্রাসার ছাত্রদের জন্য কাপড় কিনতে আসেন গোয়ালপাড়া দারুস সালাম ক্বাওমী মাদ্রাসার সাধারণ শিক্ষক মাওলানা মোঃ ইমদাদুল হক। এ সময় তিনি বলেন, ‘আগে করোনায় দীর্ঘ সময় মার্কেট খোলা ছিল না। তবে এবার মার্কেট খোলা থাকায় আমরা আমাদের সময় সুযোগ মতো সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে কাপড় ক্রয় করতে পেরে খুব ভালো লাগছে। নতুন পোশাক পেয়ে ছাত্ররাও খুশি হবে। রাতে পরিবার ও সন্তানের জন্য মার্কেট করতে এসে সাবিনা আক্তার নামে এক গৃহবধু জানান, ‘ব্যস্ততার কারণে দিনে মার্কেটে আসার সুযোগ হয়নি। এখন এসে সন্তানের জন্য পোশাক ক্রয় করেছি। এখনো কেনা শেষ হয়নি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্য কাপড় নিবো তাই মার্কেট ঘুরে দেখতেছি।
বেবী হাউজের স্বত্বাধিকারী মাহবুব সরকার বলেন, ‘গত দুই বছর করোনার জন্য ঠিকমতো ব্যবসা করতে পারিনি। এবার কাপড়ের দাম একটু বেশি হলেও মার্কেটে লোকের সমাগম অনেক বেশি এতে বিক্রয়ও হচ্ছে ভালো। এখন শারাড়া ও গারাড়া টাইপের পোশাকের চাহিদা বেশি। এছাড়াও গরমের কারণে সুতি কাপড়ের পোশাকের চাহিদা অনেক বেশি রয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার প্রতি পোশাকে প্রায় ২০০ টাকা মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়াও ব্যবসায়ীরা জানান, সকাল ১০ টা থেকে শুরু করে বিকাল ৫টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মার্কেটে ক্রেতাদের ভীড় থাকে। তারা আশাবাদী যে, কয়েকদিনে মার্কেটে এর থেকেও আর বেশি মানুষের সমাগম ও ভীড় হবে।
ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ঈদ মার্কেটে সাধারণ মানুষদের নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা সাদা পোশাকে কাজ করছে। জেলায় ঈদকে সামনে রেখে যেন কোন বিশৃঙ্খলা না ঘটে সেজন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।