যমুনার চরের সাদা বুকের মাঝে এখন হরেক রকম ফসলের সমাহার। কাউনের গাছগুলো বেড়ে উঠছে তরতর করে। ঠিক তার পাশেই চোখে পড়ছে ছোট ছোট দানার এক জাতীয় ধান গাছ। দেখে চেনার উপায় নেই এটা আসলে ধান নাকি অন্যকিছু। দেখতে ঠিক আতপ ধানের মতই। অথচ ধান নয়। এটার নাম খেরাচি। এটা মূলত: বিদেশী পাখির খাদ্য হিসেবেই ব্যবহার হয়ে থাকে।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি চরাঞ্চলের বাসিন্দা মোঃ মানিক মিয়া জানান, প্রতি জমিতে খেরাচির উৎপাদন হয় ৪ থেকে ৫ মণ। চরের উর্বর জমিতে অনেকটা বিনা খরচেই চাষ হয় বলে চাষীরা এই ফসল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। তিনি জানালেন, এক সময় চরাঞ্চলের মানুষ খেরাচির ভাত রান্না করে খেত। এখন আর সে অবস্থা নেই। এখন মূলত: বিদেশী পাখির খাবার হিসেবেই খেরাচির ব্যবহার হয়ে থাকে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে বেপারীরা এসে চরাঞ্চল থেকে খেরাচি কিনে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সারাদেশের পাখিপ্রেমীরা এটা বিদেশী পাখির খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে। এছাড়া খেরাচির পায়েস খুব সুস্বাদু। প্রতি মণ খেরাচি ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকায় পাইকারী বিক্রি হয় বলে তিনি জানান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়া অঞ্চলের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল আজিজ জানান, চলতি মৌসুমে বগুড়া অঞ্চলে শুধুমাত্র বগুড়া এবং সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন চরে খেরাচির চাষ হয়েছে। বগুড়ায় ৭৫ হেক্টর এবং সিরাজগঞ্জে চাষ হয়েছে দেড় হেক্টরে। গত বছর বগুড়ায় ৫৫ হেক্টর জমিতে খেরাচির চাষ হয়েছিল। বাজারে দাম ভাল পাওয়ায় খেরাচি চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে।